বিদ্যাসাগরের নাম নেওয়ার আগে ক্ষমা চান, মূর্তি ভাঙা প্রসঙ্গে অমিত শাহকে কড়া বার্তা অভিষেকের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৩০: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে তাঁর স্মৃতিতে মাল্যদান করতে শুক্রবার বিদ্যাসাগর কলেজে হাজির হন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক বছর আগে এই কলেজেই রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়েছিল। সেই ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ফের বিজেপিকে নিশানা করেন অভিষেক।
সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দায়ী করে অভিষেক বলেন, “বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়েছিল অমিত শাহর নেতৃত্বেই। তাই তাঁর নাম নেওয়ার আগে ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
অমিত শাহ এদিন সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজো উদ্বোধন করেন এবং তাঁর বক্তৃতায় বিদ্যাসাগরের অবদানকে স্মরণ করেন। বলেন, ব্রিটিশ শাসনের সময়েও বিদ্যাসাগর শিক্ষার আলো ছড়িয়েছেন, বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
এই বক্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় অভিষেক বলেন, “যাঁরা বিদ্যাসাগরের সংগ্রাম ও সংস্কৃতি বোঝেন না, তাঁরাই সেই মূর্তি ভেঙেছিলেন। আজও সেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বিজেপি নেতারা দলে রয়েছেন, কোনও শাস্তি হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি যারা ভেঙেছিল, তাদের মানুষ জবাব দিয়েছে। যারা এখনও বাংলা-বিরোধী মনোভাব পোষণ করে, তাদেরও জবাব দেবে বাংলা।”
পুজো প্রসঙ্গ টেনে শাহকে তীব্র আক্রমণ শানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “আজকে যাঁরা দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করছেন, তাঁরাই পাঁচ বছর আগে বলেছিলেন, বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না।”
বাংলার দুর্গাপুজো নিয়ে বিজেপিকে কড়া জবাব দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আজ দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজের স্বীকৃতি পেয়েছে বর্তমান সরকারের আমলেই। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি-শাসিত কোনও রাজ্যের উৎসব বা উদযাপন এ ধরনের স্বীকৃতি পায়নি। পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দেন, বাংলার কন্যাশ্রী প্রকল্পও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
সম্প্রতি কলকাতায় ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন পরিস্থিতি এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় বিরোধীদের সমালোচনারও জবাব দেন অভিষেক। তাঁর দাবি, দু’দিনের মধ্যেই শহর স্বাভাবিক হয়েছে। আজ যারা বাংলায় এসে পুজো উদ্বোধন করছে, তারা নির্বিঘ্নে এক মণ্ডপ থেকে অন্য মণ্ডপ বা মন্দিরে যেতে পারছে। এটাই তৃণমূল সরকারের কাজ।
এছারাও আজ এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, “আইনের দীর্ঘ হাত অবশেষে পৌঁছেছে। FRRO (Delhi)-র আটক ও নির্বাসনের নির্দেশকে কলকাতা হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেছে এবং বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা মহিলাসহ ছয়জনকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে।”
হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, “এই রায় প্রমাণ করে, বাঙালিদের বিরুদ্ধে একটি নিষ্ঠুর ও পরিকল্পিত হয়রানির প্রচার চালিয়েছে বাংলা-বিরোধী জমিদাররা। আমরা আদালতে, জনমত গঠনে এবং নির্বাচনে তাঁদের জবাবদিহি করাব।”
তিনি আরও লেখেন, “বাংলার মানুষ জাতিবিদ্বেষ, অপমান এবং বর্জনের রাজনীতি সহ্য করবে না। ২০২৬-এ যারা ভয় ও নিপীড়নের রাজনীতি করেছে, তারা জনগণের রায় পাবে।”
শেষে অভিষেকের বার্তা, “ন্যায় প্রতিষ্ঠার পথ শুরু হয়েছে। বাংলার মানুষের মর্যাদা, অধিকার ও ভাষা রক্ষায় আমাদের সংকল্প অটুট।”
Today, the long arm of the law has finally caught up. The Hon’ble Calcutta High Court has held the FRRO (Delhi) detention and deportation order unlawful and directed the immediate repatriation of six people, including the pregnant woman from BIRBHUM, who were labelled…
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) September 26, 2025