নিরালায় পাহাড়ের কোলে কালিম্পংয়ের থারপা চোলিং মঠ
ভাসমান মেঘের মাঝে উঁকি দেওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘা। এরকম নৈসর্গিক পরিবেশের মাঝে কালিম্পংয়ের পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত গাদেন থারপা চোলিং মঠ। শান্তির আলয় বললেও চলে। কালিম্পং, দার্জিলিং বা সিকিমে ঘুরতে গিয়ে যদি একদিন প্রকৃতির কোলে কাটাতে চান, তাহলে এই মঠের থেকে ভাল জায়গা নেই। প্রার্থনার সময় হৃদয় স্পর্শী ঘন্টার আওয়াজ আপনাকে এক অন্য জগতে নিয়ে যাবে। কালিম্পঙ শহর থেকে ত্রিপার পর্বতের দিকে কেডি প্রধান রোড ধরে তিন কিলোমিটার গেলেই পৌছে যাবেন এই মঠে।
১৯১২ সালে রিনপোচে দোমো গেশে গাওয়াঙ কালস্যাং নামে এক ডাক্তার এই মঠটি তৈরী করেন। চিকিৎসায় দক্ষতার জন্যে তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। এই মঠটিও তাই শরীর এবং মনের কষ্ট দূর করে বলে শোনা যায়। ডাক্তারকে মানুষ এতোই ভালোবাসত যে তাঁর মঠটি তৈরী করার কথা শুনে আশেপাশের মানুষ বিনামূল্যে চাষের জমি তাঁকে দিয়ে দেয়। সময়ের সাথে সাথে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী, শেরপা, গুরুং, তামাংরা মঠে যোগদান করেন। দোমো গেশের অবর্তমানে মঠের দায়ভার এক অ্যাবট দলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর ‘বিনয়’ নামক দলাই লামা সৃষ্ট আধ্যাত্মিক মত অনুসরণ করেন।
প্রায় ৫৫ জন সন্ন্যাসী তিব্বত এবং হিমালয়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে এখানে বসবাস শুরু করেন। তাঁরা আধ্যাত্মিক এবং জনহিতৈষী কাজে নিজেদের জীবন উৎস্বর্গ করেছেন। অল্পবয়সী সন্ন্যাসীরা কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে দৈনন্দিন জীবন কাটান। উপাসনা এবং আধ্যাত্মিক ক্রিয়া কর্মের পাশাপাশি বিভিন্ন ভাষা এবং বিষয়ের অধ্যয়ন করেন তাঁরা।
এই মঠ থেকে আপনি দেখতে পাবেন তুষারাবৃত হিমালয় চূড়ার নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য। ঘুরে দেখতে পারেন অপূর্ব এই মঠ চত্বর এবং দেওয়ালে টাঙানো গৌতম বুদ্ধের নানা ছবি। এছাড়া, চত্বরেই রয়েছে গেসার লেহাং বা চৈনিক মন্দির।
সব মিলিয়ে এক অনবদ্য অনুভূতি।