রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

শাস্তি তিন ডিলারের, রেশনে নজর ইবি-র

April 4, 2020 | 2 min read

অনিয়মের অভিযোগকে ঘিরে দু’দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষিপ্ত গোলমালের পরে গণবণ্টন ব্যবস্থায় কড়া নজরদারির বন্দোবস্ত করল রাজ্য সরকার। এই কাজে খাদ্য দফতরের আধিকারিক, জেলাশাসক, বিডিও, স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন, এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ বা ইবি-কে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আলিপুরদুয়ার, পূর্ব মেদিনীপুর ও পুরুলিয়ায় এক জন করে রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে।

খাদ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “দরকারে অফিসারদের প্রতিটি জেলায় পাঠানো হচ্ছে। অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট রেশন ডিলারের অনুমোদন বাতিলও করা হতে পারে।”

বিভিন্ন জেলায় রেশন তোলা নিয়ে গোলমালের খবর আসার পরে সুষ্ঠু বিলিবণ্টন নিশ্চিত করার নির্দেশ জেলাশাসকদের দেওয়া হয়। জেলাশাসকের অধীনে সব বিডিও-কে রেশন বণ্টনে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। রেশন দোকানের সামনে বিধি ভেঙে জমায়েত আটকানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনকে। খাদ্যশস্য বিলিতে গরমিল হচ্ছে কি না, সব জায়গায় তা দেখবে ইবি। সর্বোপরি খাদ্য দফতরের দু’জন করে অফিসার প্রতিটি জেলায় ঘুরে সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। রেশন বিলির ছবি তুলে প্রতিদিন খাদ্য দফতরে পাঠাতে হবে জেলাগুলিকে।

দূরত্ব বজায় রেখে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করার জন্য এ দিন ফের আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, হঠাৎ লকডাউন হওয়ায় সব রেশন দোকানের মজুত সমান নয়। সেগুলিতে দ্রুত পণ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। কেউ খাদ্যশস্য থেকে বঞ্চিত হবেন না। 

প্রতীকী ছবি।

বাঁকুড়ার ইঁদপুর ও ইন্দাসে কম রেশন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুরুলিয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই রেশন বিলি হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ হাসনাবাদ-সহ বিভিন্ন ব্লকে ভিড় এড়াতে কুপনে সকালে-বিকেলে রেশন দেওয়া হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের শ্যামনগর কাউগাছির একটি রেশন দোকানে আটা পাচারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।

হাওড়ার সাঁকরাইলের রঘুদেববাটী পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন রেশন ডিলারের কাছে আরকেএসওয়াই কার্ডধারীরাও বিনামূল্যে চাল-গম দাবি করেন। ব্লক প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। হুগলির ভদ্রেশ্বর ও চাঁপদানি শিল্পাঞ্চলের অনেক শ্রমিক এখনও ডিজিটাল রেশন কার্ড পাননি বলে অভিযোগ। একই ক্ষোভ রিষড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদেরও।

পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা-২ ব্লকের কিছু রেশন দোকানে কোনও পণ্যই মিলছে না বলে অভিযোগ। চন্দ্রকোনার ধাইখণ্ড ও কাসন্দ, পূর্ব বর্ধমানের মেমারি, গলসি, খণ্ডঘোষের মতো বিভিন্ন জায়গায় কম খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মেমারির কেন্না গ্রামের রেশন ডিলারকে শো-কজ় করার জেরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ‘সংঘর্ষ’ বাধে। গলসি-২ ও মেমারি-১ ব্লকের রেশন ডিলারকে শো-কজ় করা হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমায় কার্ডবিহীন গ্রাহকেরা রেশন না-পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

নদিয়ার কিছু জায়গায় রেশনে আটা না-আসায় গ্রাহকেরা পণ্য নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। রেশন না-পেয়ে কিছু বাসিন্দা মুর্শিদাবাদের সুতির কানাইঘাট গ্রামে বিক্ষোভ দেখান। বিকেলে রেশন বিলি শুরু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রেশন নিয়ে উত্তরবঙ্গে গোলমালের খবর নেই। খাদ্য দফতর জানাচ্ছে, আবেদন করেও যাঁরা এখনও রেশন কার্ড হাতে পাননি, জেলাশাসকদের সই করা ফুড কুপন তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিন দুয়েকের মধ্যে সকলেই কার্ড পেয়ে যাবেন বলে আশা করছেন খাদ্য দফতরের কর্তারা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata, #lock down, #ration dealers, #West Bengal

আরো দেখুন