রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

করোনায় ‘ডেথ অডিট’, ‘কো-মরবিডিটি’ মেনে নিল আইসিএমআর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মমতার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জন হপকিন্সের

May 14, 2020 | 2 min read

 করোনায় মৃত্যু নিয়ে ৩ এপ্রিল ‘ডেথ অডিট কমিটি’ গড়ায় বিরোধীদের প্রচুর সমালোচনার শিকার হতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আজও সমালোচনা লেগেই আছে রাজ্যের করোনা ও ‘কো-মরবিডিটি’র তত্ত্ব নিয়ে। যদিও এবার দেশবিদেশের একাধিক স্বনামধন্য সংস্থা রীতিমতো গাইডলাইন প্রকাশ করে ‘ডেথ অডিট’ এবং ‘কো-মরবিডিটি’র প্রয়োজনীয়তার কথা জানাল। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে থেকে কেন্দ্র তাদের করোনা পরিসংখ্যানে ‘কো-মরবিডিটি’র উল্লেখ করছে। মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্য তাদের করোনা বুলেটিনে মমতার দেখানো পথে ‘কো-মরবিডিটি’ বা অন্য অসুখের উপস্থিতির কথা সরকারিভাবে উল্লেখ শুরু করেছে।

কেন্দ্রের শীর্ষ চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্র আইসিএমআরও ১০ মে গাইডলাইন প্রকাশ করে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়েছে, প্রতিটি করোনা মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো শীর্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থা পর্যন্ত এই ইস্যুতে যে নড়েচড়ে বসেছে, তা বোঝা যায়, যখন ১৬ এপ্রিল তারাও করোনা-মৃত্যুর কারণ জানানোর পদ্ধতি প্রকাশ করতে বিশ্বের সব দেশগুলির জন্য আনে ১৪ পাতার গাইডলাইন ‘ইন্টারন্যাশনাল গাইডলাইন ফর সার্টিফিকেশন অ্যান্ড ক্লাসিফিকেশন (কোডিং) অব কোভিড ১৯ অ্যাজ কজ অব ডেথ’। সেখানেও ‘কো-মরবিডিটিস’ নিয়ে একটি পৃথক অধ্যায় রেখে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে হু। বিশ্বের স্বনামধন্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর বাঙালি মহামারীবিদ ও গবেষক ডঃ পর্ণালী ধর চৌধুরী আমেরিকা থেকে জানান, নোভেল করোনা সারা পৃথিবীর কাছেই নতুন। তাই এই রোগাক্রান্ত কারও মৃত্যু হলে, মৃত্যু সম্পর্কিত বিষয়গুলি সঠিকভাবে জানতে ডেথ অডিট অত্যন্ত জরুরি। কারণ, তা আসলে এই মহামারী বিষয়ক পরিস্থিতিকে সঠিকভাবে জানাতে-বুঝতেই সাহায্য করে। সেদিক থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার করোনায় ‘ডেথ অডিট কমিটি’ গঠন করে ভুল কিছু করেনি।

করোনায় ‘ডেথ অডিট’, ‘কো-মরবিডিটি’ মেনে নিল আইসিএমআর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মমতার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জন হপকিন্সের

দেখা যাক, মমতার সিদ্ধান্তকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করে আইসিএমআর ঠিক কী বলছে। তাদের ১১ পাতার গাইডলাইন ‘গাইডলাইন ফর অ্যাপ্রোপ্রিয়েট রেকর্ডিং অব কোভিড ১৯ রিলেটেড ডেথস ইন ইন্ডিয়া’র তিন নম্বর পৃষ্ঠার ‘মৃত্যুর কারণ সংক্রান্ত তথ্য জানা এত জরুরি কেন’ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, ‘‘মৃত্যুর কারণ সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে জানা সম্ভব হলে জনংখ্যায় রোগটির প্রাদুর্ভাবও সঠিকভাবে বোঝা সম্ভব হয়। পরবর্তীকালে সঠিক স্বাস্থ্য পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নিতে সুবিধা হয়’’।

এরপরই ‘কোভিড ১৯ মহামারী ও মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার প্রয়োজনীয়তা’ অধ্যায়ে আইসিএমআর জানাচ্ছে, ‘এই ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাব বুঝতে ‘মরটালিটি সার্ভেলেন্স’ বা প্রতিটি মৃত্যুতে নজরদারি অত্যন্ত জরুরি।’

এ প্রসঙ্গে বুধবার রাজ্য সরকারের করোনা মোকাবিলায় গঠিত গ্লোবাল অ্যাডভাইসারি বোর্ডের আহ্বায়ক প্রবীণ সদস্য ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, করোনায় মৃত্যু খতিয়ে দেখা বা অডিট করার প্রয়োজনীয়তা এখন আইসিএমআর থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সকলে মানছে। মানছে ‘কো-মরবিডিটি’র কথা। আইসিএমআর উল্লেখিত ‘মরটালিটি সার্ভেলেন্স’ আর আমাদের ‘ডেথ অডিট’ বা প্রতিটি মৃত্যুকে খতিয়ে দেখা আসলে মুদ্রার এ পিঠ আর ও পিঠ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #CoronavirusPandemic, #WHO

আরো দেখুন