আম্পানে দুর্নীতি রুখতে কড়া রাজ্য সরকার
করোনার সময় রেশনের দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগে বেসামাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এ বার আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। ভোটের মুখে এই ধাক্কা এড়াতে বিষয়টি সরাসরি হাতে নিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আপস নয় বরং এই ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠলেই সাংগঠনিক স্তরে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। প্রয়োজনে তদন্ত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে দলের অন্দরে।
আমপান পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনায় স্থানীয় স্তরে দুর্নীতির বিষয়টি নজরে এসেছে তৃণমূলের। আম্পানের ক্ষতিপূরণ হিসেবে যে আর্থিক সাহায্য বরাদ্দ করা হয়েছে, এ বার তা নিয়ে ওঠা অভিযোগে জেরবার তৃণমূল। বিধানসভা ভোটের আগে এই আর্থিক দুর্নীতির গুরুতর প্রভাবের আশঙ্কাও করছে তারা। তাই এখন থেকেই গোটা বিষয়টি থেকে দলকে আলাদা করতে চাইছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের সাধ্যমতো সাহায্যের পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দল সে কাজে সহযোগী ভূমিকা নেবে। অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেই সাংগঠনিক স্তরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাকিটা প্রশাসন দেখবে।’’
লকডাউন চলাকালীন আর্থিক দিক থেকে দুর্বল অংশের জন্য ত্রাণের ঘোষণা করেছিল রাজ্য। রেশনের সঙ্গে ত্রাণে অনিয়মের দায়ে বেশ কিছু রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার। একই ভাবে দলের স্থানীয় নেতাদেরও রেশন ব্যবস্থা থেকে সরাতে রাজ্য নেতৃত্ব সরাসরি অভিযুক্ত নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তাতে পরিস্থিতি কিছুটা বদল হলেও আম্পানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে সেই একই অভিজ্ঞতা হয়েছে দলীয় নেতৃত্বের। এই কাজে একেবারে স্থানীয় স্তরে সমান্তরাল নজর রেখে তার অনেকটাই চিহ্নিত করা গেছে বলে দলীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে। জেলায় পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে থাকা নেতারা ইতিমধ্যেই দলের এই বার্তা দিতে শুরু করেছেন। দলের এক নেতার কথায়, একটি জেলায় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক বলে ফেলেছেন, মাত্র ২০ হাজার টাকার লোভও সামলাতে পারলেন না!
জেলা সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত এক নেতার কথায়, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত কেউ সাহায্য পাননি বা তালিকায় তাঁদের নাম নেই এমন নয়। কিন্তু যে সংখ্যায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তা-ও কম নয়। চাষের ক্ষতি হওয়ায়, বাড়ি ভেঙে যাওয়ায়, দোকানপাট ভেঙে গেছে এমন বহু মানুষের নাম বাদ গিয়েছে।’’ তাঁর মতে, যে হেতু এই ধরনের বিষয়গুলির সঙ্গে মানুষের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে, তাই ভোটের বাক্সে তার প্রতিফলন ঘটে। কিছু জায়গায় এই অনিয়মের ফলে মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাবে। তাই দল কঠোর অবস্থান নিচ্ছে।