কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

জাত তুলে যাদবপুরের অধ্যাপিকাকে আক্রমণ, নিন্দার ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়

September 5, 2020 | 2 min read

জাতপাতের বিভেদ বাংলায় হয় না – ভদ্রলোক বাঙালির এই ঠুনকো ধারণা আবার ধূলিস্যাৎ হল। এবার বিদ্বেষমূলক আক্রমণের শিকার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা মারুনা মুর্মু। গত ২রা সেপ্টেম্বর কোভিড পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে ফেসবুকে একটি কমেন্ট করেন তিনি। এরপরই এক তরুণী তাঁর কমেন্টের জবাবে তাকে বিদ্বেষমূলক আক্রমণ করে। তার জাত তুলে তাকে অশালীন কথাও লেখে সেই তরুণী।

শুধু কমেন্টই নয়, কয়েক ঘণ্টা পর ওই তরুণী নিজের প্রোফাইলে সাঁওতালি সম্প্রদায়ের মানুষদের অপমান করে অশালীন পোস্ট করে। এতে হতচকিত এবং আহত হয়েছেন অধ্যাপিকা। যদিও এইরকম আক্রমণ তার কাছে নতুন না। তিনি দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই এরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। ওনার বক্তব্য, তিনি আদিবাসী বলে তার কোনও বিষয়ে মন্তব্য করার স্বাধীনতা নেই?

পরে জানা যায় পারমিতা ঘোষ নামক ওই তরুণী বেথুন কলেজের স্নাতকস্তরের পড়ুয়া। পারমিতার মন্তব্যের কড়া সমালোচনা ও নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে বেথুন কলেজ কর্তৃপক্ষ। বেথুন কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান ঐ ছাত্রীর হয়ে ক্ষমা চাইলে তিনি নিজেও ট্রোলিংয়ের শিকার হন।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। সব রকম ভাবে মেরুনার পাশে রয়েছি এবং থাকব।’’ যাদবপুরের ইতিহাস বিভাগের মেরুনার সহকর্মীরাও ঘটনার নিন্দা করে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন।

বেথুন কলেজের অধ্যক্ষা কৃষ্ণা রায় জানান, তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর অভিভাবকের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের খুবই গা-ছাড়া ভাব। অধ্যক্ষা বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীর বিষয়ে বিভাগের শিক্ষিকাদের এবং তাঁর সহপাঠীদের মতামত জানা হবে। এর পরে তাঁকে ডেকে কথা বলে কী করণীয় ঠিক করা হবে।’’

দলিত অধিকার রক্ষা কর্মী শরদিন্দু উদ্দীপন মনে করাচ্ছেন, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী কেরকেট্টা নামে এক শিক্ষিকাও সম্প্রতি ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এ দেশে তফসিলি জাতি ও আদিবাসী নির্যাতন প্রতিরোধ আইন রয়েছে। সেই আইন কিন্তু সচরাচর প্রয়োগই হয় না। এ ক্ষেত্রে কী হয়, সেটাই দেখব।’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#covid19, #jadavpur university, #casteist

আরো দেখুন