সেলুলয়েডে অমর শরৎচন্দ্রের সাহিত্যকর্ম
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সৃষ্টির ব্যাপারে সবসময় ছিলেন সচেতন এবং যত্নশীল। যা লিখেছেন তা রঙ, রূপ রসে ভরিয়ে জীবন্ত, প্রাণবন্ত করে তুলেছেন। সমালোচকদের ধারণা শরৎচন্দ্রের লেখার ভেতর শুধুই বেদনা। এই বেদনাই অনুপ্রাণিত করেছে বহু সিনেমা। তাঁর লেখা সেই দুঃখের গল্পগুলিই বার বার সেলুলয়েডের পর্দায় উঠে এসেছে।
আসুন দেখে নিই, কথাশিল্পীর লেখা কাহিনী অবলম্বনে তৈরি ছবির তালিকা:
দেবদাস
১৯১৭ সালে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘দেবদাস’ উপন্যাস থেকে তৈরি হয় একাধিক ছবি। বিভিন্ন শিরোনামে ও ভাষায় মোট ১৯বার রূপোলি পর্দায় উঠে এসেছে এই উপন্যাসের গল্প। প্রমথেশ বড়ুয়া, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, দিলীপ কুমার থেকে প্রসেনজিৎ বা শাহরুখ খান– ‘দেবদাস’ ছবির নামচরিত্রে অভিনয় করেছেন বিভিন্ন সময়ের প্রথম সারির অভিনেতারা।
পরিণীতা
‘দেবদাস’ ছাড়া শরৎচন্দ্রের আরো কিছু উপন্যাস পর্দায় ছায়াছবিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘পরিণীতা’। এই উপন্যাস অবলম্বনে বাংলা, হিন্দি ও তামিল ভাষায় মোট পাঁচটি সিনেমা তৈরি হয়। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার বিমল রায় ১৯৫৩ সালে ‘পরিণীতা’ উপন্যাস অবলম্বনে ছবি নির্মাণ করেন। এছাড়া, ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রদীপ সরকারের ‘পরিণীতা’ ছবিটিও খুবই সমাদৃত হয়েছিল।
মেজদিদি
শরৎচন্দ্রের অন্যতম বিখ্যাত সৃষ্টি ‘মেজ দিদি’। এই কাহিনী অবলম্বনে ১৯৬৭ সালে হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় নির্মাণ করেন ‘মজলি দিদি’ ছবিটি। মূল ভূমিকায় ছিলেন মীনা কুমারী ও ধর্মেন্দ্র।
ছোটি বহু
রাজেশ খান্না ও শর্মিলা ঠাকুর জুটির জনপ্রিয় ছবি ‘ছোটি বাহু’ নির্মিত হয় ‘বিন্দুর ছেলে’ উপন্যাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, যদিও ছবিটি ছিল একটি তেলেগু ছবির পুনঃনির্মাণ।
খুশবু
স্বনামধন্য গীতিকার গুলজার, ১৯৭৫ সালে ‘পন্ডিত মশাই’ কাহিনীর অবলম্বনে নির্মাণ করেন ‘খুশবু’, অভিনয় করেছিলেন জিতেন্দ্র, হেমা মালিনী।
সৌদামিনী
বাসু চ্যাটার্জীর পরিচালনায় সেলুলয়েডের পর্দায় শরৎ বাবুর সৌদামিনী হয়ে উঠেছিলেন শাবানা আজমি। বিখ্যাত উপন্যাস ‘স্বামী’ অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এছাড়া আরও অভিনয় করেছিলেন উৎপল দত্ত, বিক্রম।
সব্যসাচী
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত জনপ্রিয় উপন্যাস ‘পথের দাবী’। ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে এক অসাধারণ বিপ্লবী সব্যসাচী ও তার সাথীদের সংগ্রামের কাহিনী নিয়ে লিখিত একটি সাহসী উপন্যাস। ব্রিটিশ শাসিত ভারতে নিষিদ্ধ হয়েছিল বইটি। এই উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয়েছিল ‘সব্যসাচী’ যার নাম ভূমিকায় ছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার।