পুজোর মরসুমে কোটি টাকা আয় দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার
পুজোর মাসে এবার প্রায় ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা আয় করল দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (South Bengal State Transport Corporation) মেদিনীপুর ডিপো। গতবারে পুজোর মাসের থেকেও এবার এই ডিপো প্রায় ৬ লক্ষ টাকা বেশি আয় করেছে। লকডাউন পরই এই প্রথম বাস চালিয়ে মেদিনীপুর ডিপো এত টাকা আয় করল। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় সংস্থার মেদিনীপুর ডিপোর ইনচার্জ অনিমেষ দত্ত বলেন, করোনা পরিস্থিতির জন্য লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। তাছাড়া সরকারি বাসগুলি নিয়মিত স্যানিটাইজ করা হয়। পরিষেবাও ভালো। সময়মতো সব রুটে বাস চলাচল করায় যাত্রীর সংখ্যাও বেড়েছে। যার জন্য পুজোর মাসে এক ধাক্কায় আয় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। তবে, লকডাউনের আগেও একটি মাসে এরকম আয় হয়েছিল। তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এই আয় হওয়ায় কর্মীরাও খুশি।
মেদিনীপুর ডিপো থেকে কলকাতা, ধর্মতলা, হাবড়া, বারাসত, দুর্গাপুর, বর্ধমান, বহরমপুর, তারাপীঠ সহ একাধিক রুটের বাস চলাচল করে। সব মিলিয়ে ৫৫টি বাস রয়েছে। তবে, এখন সব রুটে মোট ৫০টি বাস চলাচল করছে। গত মার্চ মাসে লকডাউন (Lockdown) শুরু হওয়ার পর থেকে এই ডিপোর সমস্ত বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আনলক পর্বে সরকারি নির্দেশিকা আসার পর পরই বিভিন্ন রুটে ফের বাস চলাচল শুরু হয়। জুন মাস নাগাদ বেশ কয়েকটি রুটে বাস চলাচল শুরু করলেও খুব বেশি যাত্রী হতো না। এরমধ্যেই গত জুলাই মাসের মাঝামঝি সময় মেদিনীপুর ডিপোর পাঁচজন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হন। তারমধ্যে বাসের চালক, কন্ডাক্টর ছিলেন। ১৬ জুলাই থেকে ডিপো বন্ধ করে দেওয়া হয়। গোটা এলাকা কন্টেইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ফলে, সব রুটে ফের সরকারি বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ২ আগস্ট ফের ডিপো চালু হয়। প্রথমে হাতে গোনা কয়েকটি রুটের বাস চলাচল শুরু হয়।
করোনা আতঙ্ক (Covid 19) আর লকডাউনের জেরে ডিপোর রোজগারও ধাক্কা খেয়েছে। ডিপো সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের আগে বিভিন্ন রুটে বাস চালিয়ে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩ লক্ষ টাকা আয় ছিল। মাসে গড়ে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা আয় ছিল। কোনও কোনও মাসে ১ কোটি টাকার বেশি আয় হয়েছে। কিন্তু, লকডাউনের পর থেকে আয় একেবারে তলানিতে এসে ঠেকে। গত জুন মাস নাগাদ এক ধাক্কায় অনেকটাই আয় কমে যায়। ওই মাসে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে। বাসকর্মীরা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সমস্ত রুটের বাস চলাচল বন্ধ ছিল। সেই সময় কোনও আয় হয়নি। জুলাই মাসে আয় কমে ৩৩ লক্ষ টাকা হয়েছে। ফের আগস্ট মাস থেকে আয় বাড়তে শুরু করে। আগস্ট মাসে প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা আয় হয়। সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় দ্বিগুণ আয় হয়। এই মাসে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে। আর পুজোর মাস অক্টোবরে প্রায় ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে। গতবার অক্টোবর মাসে ১ কোটি ৫ লক্ষ আয় হয়েছিল। গতবারের পুজোর মাসের চেয়ে এবার প্রায় ৬ লক্ষ টাকা বেশি আয় হয়েছে।