দেশ বিভাগে ফিরে যান

কৃষক আন্দোলনের এক মাস পূর্ণ

December 25, 2020 | 2 min read

কৃষক আন্দোলন

আন্দোলনরত কৃষকদের (Farmers)সঙ্গে আলোচনায় বসতে ফের চিঠি দিল কেন্দ্র। নয়া কৃষি আইন(FarmBill2020) বাতিলের দাবিতে গত একমাস ধরে দিল্লির(Delhi) সীমানায় আন্দোলন (Protests) চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। হাড়কাঁপুনি ঠাণ্ডার মধ্যেও সেই আন্দোলনে কোনও ছেদ পড়েনি। তাতে, কার্যত দিশাহারা সরকার। সেই কারণে বিক্ষোভকারীদের সময় মতোই  বৈঠকে বসতে তৈরি বলেও ওই চিঠিতে জানিয়েছে মোদি সরকার(Modi Govt)। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমারের(Narendra Singh Tomar) নির্দেশে আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলির ৪০ জন প্রতিনিধিকে চিঠি দিলেন মন্ত্রকের যুগ্মসচিব বিবেক আগরওয়াল(Vivek Aggarwal)। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) অটুট থাকবে। কিন্তু অনড় কৃষকরা বিতর্কিত আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন(Farmers Protest) প্রত্যাহার করে বাড়ি ফিরতে নারাজ। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ারই আশঙ্কাই থাকছে। 
বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানানো পাশাপাশি কৃষকদের ‘মনজয়’ করার চেষ্টাও করছে কেন্দ্রীয় সরকার(Central Govt)। জানা গিয়েছে, আজ বড়দিনে ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্পে দেশের ৯ কোটি কৃষককে ১৮ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কর্মসূচি রাখা হয়েছে বলেই রাজনৈতিক মহলের মত। আজ দুপুর ১২টায় ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কেবল কিস্তির টাকা দেওয়াই নয়, কৃষকদের সঙ্গে অনলাইনে কথাও বলবেন প্রধানমন্ত্রী। 
অন্যদিকে, কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে মোদি সরকারকে হুমকি দিলেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেছেন, ‘অন্নদাতা কৃষকদের এই আন্দোলন চলবে। সরকার কী করে তাঁদের হটায় দেখি। যতক্ষণ না আইন বাতিল হচ্ছে, ততক্ষণ সীমানায় কৃষকরা যেমন বিক্ষোভ চালাবে, একইভাবে আমরাও সরকারকে চাপ দেব।’ রাহুল আরও বলেন, ‘মুষ্ঠিমেয় ব্যবসায়ীদের লাভের দিকে না তাকিয়ে নরেন্দ্র মোদির উচিত গরিব কৃষকদের কথা শোনা। সংসদের যৌথ অধিবেশন ডেকে তিন কৃষি ও কৃষক সংক্রান্ত আইন বাতিলের দাবিও করেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। 
সরকারকে কোণঠাসা করতে এদিনই রাহুল দলের এমপিদের নিয়ে একদিকে যেমন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছেন, অন্যদিকে নেতা, কর্মীদের নিয়ে পথে নামলেন প্রিয়াঙ্কা। ২৪ আকবর রোডে এআইসিসির সদর দপ্তর থেকে মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবনে যেতে চাইলে পুলিস বাধা দেয়। প্রিয়াঙ্কাও জেদ ধরেন, যেতে দিতে হবে। যা নিয়ে পুলিসের সঙ্গে জোর বিতণ্ডা বাধে। শেষে রাস্তাতেই সদলে ধর্ণায় বসে পড়েন সোনিয়া-কন্যা। পুলিস গোটা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রিয়াঙ্কা সহ কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের আটক করে। ডিটিসির বাসে চাপিয়ে মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ আটক রেখে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। 
পরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘এই সরকার গরিব, কৃষকদের কথা শোনে না। তাদের নিয়ে বলতে গেলেও বাধা দেয়।’ রাহুল গান্ধীও বলেন, বিরোধিতা করলেই সন্ত্রাসবাদী, বিছিন্নতাবাদীর তকমা দেয় মোদি সরকার। কোনওদিন যদি সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতও নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতা করেন, তাঁকেও একই তকমা দেওয়া হবে। এ কোন গণতান্ত্রিক দেশে বাস করছি আমরা?’ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন রাহুল। 
ইতিমধ্যেই কৃষি আইনের বিরোধিতায় প্রায় ২ কোটি সই সংগ্রহ করেছে কংগ্রেস। এদিন সই করা সমস্ত কাগজ দু’টি ট্রাকে চাপিয়ে এআইসিসির সদর দপ্তর থেকে রাইসিনা হিলে রাষ্ট্রপতি ভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন রাহুল। যদিও সেই ট্রাকগুলি রাষ্ট্রপতি ভবনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তা কৃষিভবনে পাঠাতে বলে দেয় রাষ্ট্রপতির সচিবালয়। 
এদিকে কংগ্রেসের এই স্বাক্ষর সংগ্রহকে কটাক্ষ করেছেন কৃষিমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘রাহুল গান্ধীর সংগ্রহ করা এইসব সই ‘ফেক’। আমরা আলোচনার মাধ্যমে যখন সমাধানের পথ খুঁজছি, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তখন কৃষকদের খেপাচ্ছে।’ মন্ত্রীকে পাল্টা দিতে ছাড়েননি বিরোধীরাও। অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘কৃষকদের সই জাল না আসল, সরকার তা খতিয়ে দেখে নিক। মোদিজির হাতে তো সিবিআই, ইডি সবই রয়েছে।’ কৃষকদের কাঁধে বন্দুক রেখে বিরোধীরা রাজনীতি করছে বলে কয়েকদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন মোদি। তারই প্রতিবাদে এদিন মোদিকেই ‘মিথ্যেবাদী’ আখ্যা দিয়ে যৌথ বিবৃতিতে সই করেছেন শারদ পাওয়ার, রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরি, দেবব্রত বিশ্বাস, অখিলেশ যাদব, টি আর বালুর মতো নেতারা। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#farmers, #Farm Bill 2020, #Farmers' protest

আরো দেখুন