দেশ বিভাগে ফিরে যান

মমতাকে ধরে রাখতে না পারা কংগ্রেসের ব্যর্থতা, বইতে বিস্ফোরক প্রণব মুখোপাধ্যায়

January 7, 2021 | 2 min read

এনডিএ ও ইউপিএ-দুই জোটেরই প্রবল অস্বস্তির কাঁটা হয়ে প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের (Pranab Mukherjee) বই ‘দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ার্স-২০১২-২০১৭।’ এই বইতেই প্রণব মুখোপাধ্যায় একাধারে যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন, তেমনি ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের নীতিরও প্রবল সমালোচনা করেছেন তিনি। নিজের বইতে তিনি স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোটবন্দি ঘোষণা করার আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করেননি৷ তেমনি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে মোদীর আত্মপ্রচারকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি।

তিনি লিখেছেন, ‘আমিও দেশবাসীর সঙ্গে একই সময়ে ঘটনার কথা জানতে পারি, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন৷ এই ক্ষেত্রে বিরাট সমালোচনা হয়েছিল যে, এত বড় মাপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে আইন প্রণয়নকারী (সংসদ) এবং বিরোধী শিবিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা বলা উচিত ছিল৷’ যদিও এর পরেই প্রণববাবু জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করতেন, নোটবন্দির সারপ্রাইজ এবং আকস্মিকতা প্রয়োজনীয় ছিল, তাই তিনি খুব একটা অবাক হননি৷ এই প্রসঙ্গে নোটবন্দির ব্যর্থতার দিকগুলিকেও তুলে ধরেছেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি৷ তাঁর কথায়, ‘ভয় ভীতিহীন ভাবে একটা কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, সরকারের তরফে জানানো নোটবন্দির বিবিধ উদ্দেশ্য একেবারেই সিদ্ধ হয়নি৷ এর মধ্যে আছে বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনা, দেশে কালো টাকার ব্যবসা বন্ধ করা এবং গোটা সমাজকে ‘ক্যাশলেস’ করে তুলতে সহায়তা করা৷’ নোটবন্দির পাশাপাশি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে তিনি লেখেন, ‘২০১৬ সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়েও অত্যধিক মাতামাতি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টা এত প্রচার করে ভারতের কোনও লাভই হয়নি। দু’দেশের সম্পর্কের নিরিখে মোদীর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়াও একেবারে অযৌক্তিক।’

নোটবন্দিকে কেন্দ্র করে মোদী সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রণববাবু৷ ইউপিএ জোট সরকারে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ধরে রাখতে না পারা যে বড় ব্যর্থতা তা খোলাখুলিই জানিয়েছেন তিনি৷ লিখেছেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় সরকারের (ইউপিএ-২) অর্থমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে গেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জোট সরকারে ধরে রাখতাম৷ কংগ্রেসের কয়েকজন নেতার নৈপুণ্য ও অহংকার দলের ভাগ্যকে আরও আঘাত করেছে৷ আমি বিশ্বাস করি যে সঙ্কটের সময়ে দলীয় নেতৃত্বকে আলাদা পদ্ধতির উদ্ভাবন করতে হবে৷’

নোটবন্দির ঘোষণার পরে মোদী যে তৎকালীন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরামর্শ করেছিলেন, সে কথাও জানিয়েছেন প্রণববাবু নিজেই৷ তাঁকে প্রণববাবু বলেছিলেন, ‘এ সাহসী পদক্ষেপ হওয়া সত্বেও দেশের অর্থনীতির গতিকে ধীর করবে নোটবন্দি৷’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #Pranab Mukherjee

আরো দেখুন