কেরল, তামিলনাড়ুতে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ, উদ্বেগে নির্বাচন কমিশন
ভোটমুখী কেরল এবং তামিলনাড়ুতে সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে। একই সঙ্গে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়েও ছড়াচ্ছে ব্যাপক হারে। তাই করোনা (COVID19)পরিস্থিতিতে চার রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত পুদুচেরিতে ভোট নিয়ে ব্যাপক চিন্তিত স্বাস্থ্যমন্ত্রক(Ministry Of Health)। ওই সাত রাজ্যের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকও করলেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব। কিন্তু নির্বাচন নির্ঘণ্ট ঘোষণা না হওয়া সত্ত্বেও জনসভার ভিড় দেখে মাথায় হাত স্বাস্থ্যমন্ত্রকের।
দিশাহারা নির্বাচন কমিশনও(Election Commission of India)। বাড়ি বাড়ি প্রচার থেকে শুরু করে রোড শো সংক্রান্ত বিধি বেঁধে দিলেও কমবেশি সব রাজনৈতিক দলই বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে। আধঘণ্টার তফাতে পাঁচটি করে গাড়ির কনভয় অনুমোদন যোগ্য, বলছে কমিশন। বাড়ি বাড়ি প্রচারে প্রার্থী সহ অনুমোদন মাত্র পাঁচজনের। কিন্তু তা পালন হচ্ছে কি? উঠছে প্রশ্ন। সেই সঙ্গে প্রবেশ-প্রস্থানের পৃথক গেট সহ প্রত্যেকের মাস্ক পরা, হাত স্যানিটাইজ করা, থার্মাল স্ক্যানিং সহ দূরত্ব বিধি বজায় রাখতে মার্ক করা স্থানেই দর্শকদের দাঁড়ানো বা বসার মতো জনসভার জমায়েত নিয়েও নির্দেশিকা আছে কমিশনের। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। নির্দেশ অমান্য করলে ‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট আইন ২০০৫’ মোতাবেক জেল, জরিমানার কথাও উল্লেখ আছে খাতায় কলমে। কিন্তু তা কার্যকর হচ্ছে কি? পিছু ছাড়ছে না এই সওয়ালও। তাই কোভিড পরিস্থিতিতে ভোট নিয়ে চিন্তায় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
আইসিএমআরের(ICMR) ডিজি ডাঃ বলরাম ভার্গব বলেন, দেশের প্রত্যেককে মাস্ক পরতেই হবে। নাহলে সংক্রমণ রোখা অত্যন্ত কঠিন। নীতি আয়োগের সদস্য তথা কেন্দ্রের কোভিড ভ্যাকসিন সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের চেয়ারম্যান ডাঃ বিনোদ কুমার পলের মন্তব্য, নাগরিকরা যেন ভুলে না যান যে, করোনার ভাইরাস ‘সার্স কোভ-টু’ কিন্তু এখনও আমাদের চারপাশেই ঘুরছে। একটু অসতর্ক হলেই হামলা করবে। তাই টিকা নেওয়াটা যেমন জরুরি, একইভাবে মনে রাখতে হবে যে, টিকা নেওয়ার পরও করোনা বিধি মেনে চলতে হবে।
এদিকে, আগামী সোমবার ১ মার্চ থেকে সাধারণ নাগরিকদের করোনার টিকা দেওয়ার কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হলেও প্রাপকদের নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারির হিসেব মতো ষাটোর্ধ্ব যে কোনও নাগরিক এবং ৪৫ বছরের বেশি বয়সি যাঁদের বিভিন্ন রোগ রয়েছে, তাঁরা এবার টিকা পাবেন। কিন্তু ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু, অসম এবং পুদুচেরির প্রায় সাড়ে তিন কোটি ষাটোর্ধ্ব নাগরিকের টিকাকরণ কতটা সম্ভব, তা নিয়ে অতল জলে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
জবাব নেই কমিশনের কাছেও। কারণ, টিকা না নিলে ভোট দিতে পারবেন না, এমন নির্দেশ দেওয়া যায় না। আবার দুটি ডোজ নেওয়ার পরেই টিকা সঠিক কার্যকর হয়। তাই এপ্রিলে ভোট হলে স্রেফ এক মাসের মধ্যে ২৮ দিনের তফাতে উল্লেখিত পাঁচ রাজ্যের ষাটোর্ধ্ব সবাইকে টিকা দেওয়া বাস্তবিকই অসম্ভব। তাই ভোটের ভিড়ে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। যা ঘুম কেড়ে নিয়েছে সরকারের।