করোনার টিকা পেয়েছেন বাংলার এক তৃতীয়াংশ প্রবীণ
রাজ্যের প্রতি তিনজন ষাটোর্ধ্ব মানুষের একজন করোনা ভ্যাকসিনের ন্যুনতম একটা ডোজ পেয়েছেন। ৪৫ থেকে ৬০ জনসংখ্যার প্রতি পাঁচজনের একজন পেয়েছেন একটি করে ভ্যাকসিনের ডোজ। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। দপ্তরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, বাংলায় ষাটোর্ধ্ব জনসংখ্যা এক কোটি ২০ লক্ষ। এই বিশাল সংখ্যক মানুষের ৩৩ শতাংশই কমপক্ষে একটি করে করোনা টিকার ডোজ পেয়েছেন। দুটি ডোজ সম্পূর্ণ হয়েছে, এমন মানুষও প্রচুর। অন্যদিকে ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সি বঙ্গবাসীর সংখ্যা এক কোটি ৫০ লক্ষ। তাঁদের ২১ শতাংশই পেয়ে গিয়েছেন অন্তত একটা ডোজ করোনা টিকা। এক্ষেত্রে অবশ্য দুটি ডোজ পাওয়া মানুষের সংখ্যা তুলনায় কম। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, প্রবীণদের মধ্যে করোনা টিকা নেওয়ার প্রবণতা দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়ার সুফলও মিলছে হাতেনাতে। তাঁদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমছে। যদিও আক্রান্ত হনও, রোগের জটিলতা কমছে। মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে এবং কমছে।
এভাবে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই সর্বস্তরের স্বাস্থ্যকর্মী-চিকিৎসক ও কর্তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় টিকাকরণ নিয়ে নিজেদের গড়া বিভিন্ন রেকর্ড নিজেরাই ভেঙে এগিয়ে চলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। ৪৫ উর্ধ্ব জনসংখ্যার টিকাকরণের জন্য রাজ্য সরকারের কেন্দ্রের কাছে পাওনা ছিল আনুমানিক ছয় কোটি ডোজ। রাজ্য পেয়েছে মাত্র এক কোটি ২২ লক্ষ টিকা (আনুমানিক)! মে মাসের বাকি ১৪ দিনের জন্য মাত্র ১০ লক্ষ টিকা পাবে রাজ্য।
অন্যদিকে গাঁটের পয়সা খরচ করে টিকা কিনে রাজ্যবাসীকে দিতে চাইলেও, চাহিদার নামমাত্র পরিমাণ টিকা কেনায় অনুমোদন দিচ্ছে কেন্দ্র। বাংলা চেয়েছিল তিন কোটি টিকা কিনতে। প্রথম ধাপে ১৪ লাখ এবং পরের ধাপে আরও তিন লক্ষ—সবমিলিয়ে ১৭ লক্ষ টিকা কেনায় অনুমোদন দিয়েছে মোদি সরকার। ১৪ লাখের কিছু বেশি টিকার দামবাবদ প্রায় ৪৮ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই মিটিয়ে দিয়েছে রাজ্য। আজ সোমবার আরও তিন লক্ষ টিকার দাম মিটিয়ে দেবে সরকার। দপ্তরের এক পদস্থ কর্তা ক্ষোভের সুরে বলেন, সার্বিকভাবে জনসংখ্যা অনুপাতে যা টিকা পাওয়া উচিত, তার মাত্র ২ শতাংশ পেয়েছি আমরা।
কষ্টের সংসার চালিয়েও, এরই মধ্যে সর্বোচ্চ সাশ্রয় করছে রাজ্য। কোভিশিল্ডের একটা ডোজও নষ্ট হয়নি রাজ্যে। প্রতি ভায়াল থেকে দেওয়া হয়েছে ১১টা ডোজ। এভাবে কেন্দ্রীয় অসহযোগিতার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ টিকা বাড়তি বের করে নিতে পেরেছে রাজ্য। ইতিমধ্যে তা দেওয়াও হয়েছে রাজ্যবাসীকেই। কোভ্যাকসিনে অবশ্য ১ শতাংশ ডোজ নষ্ট হয়েছে। যদিও তা টিকার ডোজ নষ্ট হওয়ার জাতীয় গড় ৩-৪ শতাংশের তুলনায় অনেকটাই কম। সূত্রের খবর, একদিকে লকডাউন পরিস্থিতি, অন্যদিকে রবিবার—দুইয়ের কারণে এদিন টিকাকরণ যৎসামান্য হয়েছে। আজ কতটা হবে, সেইটাই এখন দেখার।