রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

পশ্চিমবঙ্গে বাংলায় ‘জনাব নয় শ্রী’, বলা যেতেই পারেঃ ফিরহাদ হাকিম

November 24, 2021 | 2 min read

বাংলা ভাষার ধরন শেখালেন Firhad Hakim। বুধবার কলকাতায় পরিবহণ দপ্তরের এক অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানালেন, পশ্চিমবঙ্গে বাংলায় কোনও বক্তব্য রাখতে গেলে যে কোনও পুরুষকে সম্মানসূচক অভিধায় ‘শ্রী’ বলেই উল্লেখ করতে হয়। ভাষাটা বাংলা, এর সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই।

এ দিন কসবায় দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের ডিপোয় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কলকাতা থেকে চারটি জেলায় চারটি অত্যাধুনিক বাস পরিষেবা চালুর প্রতীকী উদ্বোধনের অনুষ্ঠান। সেখানেই সঞ্চালক রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীকে কিছু বলতে অনুরোধ করার সময় তাঁর পরিচয় জ্ঞাপনের ক্ষেত্রে বলেন, ‘জনাব ফিরহাদ হাকিম’।

বক্তব্য রাখতে উঠে ফিরহাদ বলেন, ‘সবার আগে সঞ্চালক মহাশয়কে জানাই, বাংলায় কোনও ব্যক্তিকে সম্মানসূচক সম্বোধনের ক্ষেত্রে শ্রী বলাটাই বাঞ্ছনীয়। তিনি যে ধর্মের মানুষই হোন না কেন! ভাষার সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগ নেই, বিরোধও নেই। বাংলাদেশে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষকে সম্বোধন করতে গিয়ে অনেকে জনাব বলেন। সেটা উর্দু ভাষার প্রভাব। দীর্ঘদিন পাক-অধীনে থাকা বাংলাদেশের বাংলা ভাষা উর্দু দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়েছে বলে এমনটা হয়েছে। কিন্তু এ পারে তেমন উর্দু প্রভাব নেই। ফলে আমাকে শ্রী বলা যেতেই পারে।’

ফিরহাদ দাবি করেন, ইংরিজিতে বললে তাঁকে মিস্টার বলেই সম্বোধন করা হবে। উর্দুতে জনাব কথার অর্থ সম্মাননীয় ব্যক্তি। তা হলে বাংলায় শ্রী বলা হলে দোষ কোথায়? যদিও এর মধ্যে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই।

গত কয়েকদিন ধরেই ধর্ম নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র। তাঁকে লক্ষ্য করে একাধিকবার অস্ত্র শানিয়েছে BJP। দুর্গাপুজোর সময় একটি মণ্ডপে মুখ্যমন্ত্রীর আদলে দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ওই পুজোতে উপস্থিত হয়ে ফিরহাদ বলেছিলেন, যা দেবী সর্ব ভূতেষু মমতারূপেণ সংস্থিতা। এরপর BJP নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি কলকাতা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, হিন্দু ভিন্ ধর্মের মন্ত্রী নিজের মতো করে দুর্গাস্তব রচনা করে ভাবাবেগে আঘাত করেছেন বলে।

গত ১৫ নভেম্বর ফের বিতর্কে জড়ান ফিরহাদ। সে দিন এক বৌদ্ধ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্মই একমাত্র শান্তির পথ দেখায়। আজ চারিদিকে হিংসা। একদিকে হিন্দুত্ববাদের হিংসা। অন্য দিকে ইসলামাবাদের হিংসা।

এরপরই ক্ষোভ সঞ্চারিত হতে থাকে। কিছুক্ষণ পরই নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডল থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করে ফিরহাদ। লেখেন, আমার ধর্ম ইসলাম। আমার ধর্ম শান্তির ধর্ম, আমাকে মানবতা ও অন্য ধর্মকে সম্মান করতে শেখায়। আমি সমস্ত ধর্মকে সম্মান করি। আমার কোনও বক্তব্যে যদি কেউ আঘা্ত পেয়ে থাকেন তবে আমি ক্ষমা প্রার্থী। আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য বাংলা ভাষা ও তার ব্যবহার নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। বিশেষত সমাজ মাধ্যমের দৌলতে বাংলা শব্দের স্থানে অন্য ভাষার শব্দ ব্যবহারের প্রবণতা যেমন বাড়ছে। তেমনই বাড়ছে সে সবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আওয়াজও। তাই এক শ্রেণির নাগরিক অবশ্য ফিরহাদের বক্তব্যকে ধর্মের ঊর্ধ্বেই দেখতে চাইছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Bengali, #firhad hakim

আরো দেখুন