যেতে হবে না ব্যাঙ্কে, এবার থেকে স্কুল কলেজেই হবে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ক্যাম্প
উচ্চশিক্ষার স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে আরও সহজ। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রকল্প চালুর কয়েক মাসের মধ্যে ফের নতুন উদ্যোগ রাজ্য সরকারের। এবার স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়েই হবে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের শিবির। মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি পলিটেকনিক এবং আইটিআই পড়ুয়াদের জন্যও স্পেশাল ক্যাম্প করার নির্দেশ তাঁর। তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে এবং আরও বেশি সংখ্যক পড়ুয়া যাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের সুবিধা পায়, সেজন্য স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির করা হবে। উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরকে নিয়ে এদিন প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, বুধবার মালদহে তাঁর বৈঠক করার কথা।
টাকার অভাবে রাজ্যের অনেক পড়ুয়া পেশাগত শিক্ষা, উচ্চশিক্ষার সুযোগ পান না। সেটা মাথায় রেখেই গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন হয়েই তিনি এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দেন। সরকার শপথ নেওয়ার দু’মাসের মধ্যে চালু হয় স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। গত ছ’মাসে এই প্রকল্পে অনেকে অভাবী পড়ুয়াই আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন। এদিন কর্ণজোড়ায় সেই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, এখনও পর্যন্ত কত পড়ুয়া আবেদন করেছে এবং কতজন স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পেয়েছে? উত্তরে প্রশাসনিক সচিবরা জানান, ১ লক্ষ ১০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৮ হাজারের নিষ্পত্তি হয়েছে। শুনে খানিক অসন্তুষ্ট হন মমতা। বলেন, নিষ্পত্তি না হওয়া আবেদনের সংখ্যাও কম নয়। জেলায় জেলায় নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে বলুন। প্রকল্প দেখভালে টাস্ক ফোর্স গঠনেরও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
পয়লা জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত স্টুডেন্ট সপ্তাহ পালনের কথা আগেই ঘোষণা হয়েছিল। এদিনের বৈঠকে সেই বিষয়টি ফের মনে করিয়ে দেন মমতা। বৈঠকে আধিকারিকদের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়, স্টুডেন্ট সপ্তাহে রাজ্যে ২৫ হাজার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে সেই কাজ চলতে থাকবে।
দুই দিনাজপুরে বহু মৎস্যচাষি রয়েছেন। সেব্যাপারে অবগত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। তাই মৎস্যজীবীদের জন্য কার্ডের কথা বৈঠকে তিনি তুলে ধরেন। বলেন, ওই কার্ড থাকলে তাঁরা আর্থিক সহায়তা পাবেন। এছাড়া যে সমস্ত শিল্পী হাতের কাজ করেন, তাঁদের জন্য কার্ড করা হচ্ছে। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে এ বিষয়ে আবেদন করা যাবে।
উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের আধিকারিকদের কাছে এদিন মুখ্যমন্ত্রী একাধিক প্রকল্পের খোঁজ নিয়েছেন। উত্তর দিনাজপুরের প্রসিদ্ধ তুলাইপাঞ্জি ধানের চাষ, ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ কেমন হচ্ছে জানতে চান। তুলাইপাঞ্জির চাষ ও উৎপাদন আরও বৃদ্ধির দিকে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক অরবিন্দ মিনাকে নজর দেওয়ার নির্দেশও দেন।