১৪ তলা ভবন হতে চলেছে এনআরএস হাসপাতাল
সময় যতই এগচ্ছে, শহরের আকাশ ঢাকছে বহুতল আবাসনে। ২৫ তলা থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬৫ তলা বাড়িও উঠে গিয়েছে। আবাসনের মতো অতটা তরতরিয়ে না-হলেও, বিভিন্ন বেসরকারি অফিসও কম যাচ্ছে না। পিছিয়ে থাকবে কেন সরকারি ক্ষেত্রও? বিশেষত, যেখানে পরিকাঠামো বৃদ্ধির চাহিদা বিপুল। এই বিষয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যদপ্তর। এর জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ হল, গ্রাম-শহর মিলিয়ে রাজ্যের নানা স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ১০ তলা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালগুলি। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উঁচু বাড়ির তালিকায় নবতম সংযোজন পিজি হাসপাতালের ১১ তলা ট্রমা সেন্টার। এবার তাকেও ছাপিয়ে যেতে চলেছে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কারণ, স্বাস্থ্যদপ্তরের সবচেয়ে উঁচু হাসপাতাল হতে চলেছে এনআরএস। ভূমিকম্প বা বড় কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এনআরএসের ইমার্জেন্সি তথা ইউ এন ব্রহ্মচারী বাড়িটি যে-কোনও সময় ভেঙে ধূলিসাৎ হতে পারে। বহুদিন আগেই এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল পূর্তদপ্তর। এবার সেখানেই ১৪ তলা বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে হাসপাতালের পূর্তবিভাগও।
এনআরএসের অধ্যক্ষ ডাঃ শৈবাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ইউএনবি’র জায়গায় জি প্লাস ১৩ তলা বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। পূর্তদপ্তরের কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম, এমন সম্ভব কি না। ওরা জানিয়েছে সম্ভব। দেখা যাক, কীভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যায়। এনআরএস সূত্রের খবর, এখানকার সুপার অফিসের উল্টোদিকে আগের ফরেন্সিক ও স্টেট মেডিসিন বিভাগের একতলা বাড়িটি ভেঙে সেই জায়গায় বেসমেন্ট, গ্রাউন্ড ফ্লোর নিয়ে প্রায় ১২ তলা নতুন বি সি রায় ভবন তৈরি হচ্ছে। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি তথা ইউএনবি বাড়ির সমস্ত বিভাগ, ইন্ডোর, অপারেশন থিয়েটার, সিসিইউ সবই চলে যাবে সেখানে।
বর্তমানে ইউএনবি বাড়িতে রয়েছে ইমার্জেন্সি এবং ওটি, অর্থোপেডিক ও জেনারেল সার্জারির ইমার্জেন্সি বিভাগগুলি। এছাড়া ব্লাড ব্যাঙ্ক, চক্ষু, নিউরোমেডিসিন, নিউরোসার্জারি, কার্ডিওলজি, সিটিভিএস, জেনারেল মেডিসিন, রেডিওলজি, সিসিইউ, আইটিইউ, কার্ডিয়াক অ্যানাসথেশিয়া প্রভৃতি বিভাগ। এসব বিভাগই ধাপে ধাপে পাঠানো হবে নতুন বি সি রায় বাড়িতে। আর ইউএনবি বাড়িটি ভেঙে সেখানেই তৈরি হবে প্রস্তাবিত ১৪ তলা বাড়ি।
হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, বর্তমানে যেখানে ইউএনবি বাড়ি রয়েছে, ঠিক তার পিছনেই রয়েছে ডেপুটি সুপারের কোয়ার্টার-সহ বহু অব্যবহৃত জায়গা। প্রস্তাবিত ১৪ তলা বাড়িটি তৈরি করা হবে হাসপাতালের ওইসব অব্যবহৃত জায়গা নিয়েই।
কী কী বিভাগ থাকবে ওই বাড়িতে? হাসপাতালের সমস্ত সুপারস্পেশালিটি বিভাগ থাকবে সেখানে। যেমন—নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি, ইউরোলজি, কার্ডিওলজি ও কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি, পেডিয়াট্রিক সার্জারি, নেফ্রোলজি ইত্যাদি। এছাড়া নতুন বাড়িতে সার্জিক্যাল অঙ্কোলজি বিভাগ খোলারও পরিকল্পনা রয়েছে।