বছর শেষের উৎসবের মরশুমে চাহিদা তুঙ্গে টয় ট্রেনের
বড়দিন ও নিউ ইয়ারে হেরিটেজ টয় ট্রেনের জয় রাইডে পাহাড় ভ্রমণের চাহিদা বাড়ছে। করোনার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পর্যটন শিল্প। আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে টয় ট্রেনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বছরের এই বিশেষ দু’টি দিনে টয় ট্রেনের জয় রাইড করতে মুখিয়ে পর্যটকরা। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়দিন ও নিউ ইয়ারে জয় রাইডের বুকিংয়ে ভালো সাড়া রয়েছে।
টয় ট্রেনে পর্যটকদের পাহাড় ভ্রমণের চাহিদা পূরণ করতে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে বা ডিএইচআর একের পর এক পরিষেবা ও সুযোগ সুবিধা যোগ করছে। সেই মতো পাহাড়ে জয় রাইডের সংখ্যা অনেকদিন আগেই বাড়ানো হয়েছে। তাতেও সবসময় চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এই জনপ্রিয়তা দেখে এবার টয় ট্রেনের জয় রাইড ভ্রমণকে আরও আকর্ষণীয় করতে চলেছে রেল। আগামী ১ এপ্রিল থেকে দার্জিলিং- ঘুমের মধ্যে সব জয় রাইডে থাকছে ভিস্তা ডোম কোচ।
ডিএইচআরের ডিরেক্টর অরবিন্দকুমার মিশ্র বলেন, ১ এপ্রিল থেকে দার্জিলিং- ঘুমের মধ্যে চলাচলকারী আটটি জয় রাইডেই ভিস্তা ডোম কোচ থাকবে। এর মধ্যে চারটি ডিজেল ইঞ্জিনে এবং চারটি স্টিম ইঞ্জিনে চলবে। ডিজেল ইঞ্জিনে চলা জয় রাইডে চারটি ও স্টিম ইঞ্জিনে চলা জয় রাইডে দু’টি করে ভিস্তা ডোম কোচ থাকবে। বিলাসবহুল সুদৃশ্য এই কোচে বসে পাহাড়ের নৈসর্গিক দৃশ্য মন ভরে উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। এর পাশাপাশি এনজেপি-দার্জিলিংয়ের মধ্যে আগামী ১ মার্চ থেকে আবার টয় ট্রেন পরিষেবা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ডিএইচআর। সেদিন থেকেই এনজেপি-দার্জিলিংয়ের মধ্যে চলাচলকারী টয় ট্রেনে দু’টি এসি কোচ থাকবে বলে জানান অরবিন্দকুমার মিশ্র। এদিকে শিলিগুড়ি জংশন থেকে রংটংয়ের মধ্যে চলাচলকারী জঙ্গল টি সাফারির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিএইচআর ডিরেক্টর বলেন, এখন মাঝেমধ্যেই জয় রাইড ও জঙ্গলটি টি সাফারিতে ভিস্তা ডোম কোচ ভাড়া নিয়ে অনেকেই পাহাড় ভ্রমণ করছেন। বড়দিন এবং নিউ ইয়ারেও জয় রাইডের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে আমরা আলাদা করে কোনও অনুষ্ঠান করছি না। উৎসবের বিশেষ ওই দু’দিন জয় রাইডে ভ্রমণের জন্য প্রত্যেক যাত্রীকে বিশেষভাবে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। যাতে উৎসবের দিনে জয় রাইডে ভ্রমণের মুহূর্ত তাঁদের কাছে স্মরণীয় করে রাখা যায়।
প্রসঙ্গত, করোনার আতঙ্ক সরিয়ে পুজোর সময় থেকে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় ও টয় ট্রেনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির দিকটি ডিএইচআর কর্তৃপক্ষকে ঘুম উৎসব করার ব্যাপারে উৎসাহিত করে। সম্প্রতি টয় ট্রেনকে বিশ্বের দরবারে আরও ব্যাপকভাবে মেলে ধরার লক্ষ্যে ঘুম উৎসবের আয়োজন করা হয়। তাতে ভালো সাড়া মিলেছে। অরবিন্দকুমার মিশ্র বলেন, ঘুম উৎসবে পর্যটকদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মেলায় পর্যটন মরশুমে টয় ট্রেনের পরিষেবা আরও সুখকর ও স্মরণীয় করে তোলার জন্য ১ এপ্রিল থেকে জয় রাইডে ভিস্তা ডোম কোচ যুক্ত করা হচ্ছে। অথচ একসময় ক্ষতির বহর বেড়ে যাওয়ায় টয় ট্রেনের হেরিটেজ তকমা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল রেল কর্তৃপক্ষের কাছে। সেই সন্ধিক্ষণে করোনার প্রভাবে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে সবকিছু সামলে উঠে পর্যটন শিল্প স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তারসঙ্গে তাল মিলিয়ে টয় ট্রেনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এই দিককে হাতিয়ার করে পরিষেবা উন্নত করতে সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর ডিএইচআর।