রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

সাঁতরাগাছি ঝিলে পরিযায়ী পাখিদের রেকর্ড ভিড়

January 16, 2022 | 2 min read

গতবারের সংখ্যাকে ছাপিয়ে রেকর্ড পরিযায়ী পাখির ভিড় হল সাঁতরাগাছি ঝিলে। চলতি বছরে সাত হাজারের কাছাকাছি পাখির এসেছে শহরতলির এই জলাশয়ে। যদিও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বিদেশি পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। বিদেশি অতিথিরা এভাবে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় উদ্বেগে পক্ষী বিশারদরা। তবে আশ্বাসের আলো দেখিয়েছে দেশি পরিযায়ীর দল। কারণ আনাগোনা বেড়েছে তাদের।

চলতি মরশুমে শীত কিছুটা দেরিতে কড়া নেড়েছে বাংলার দুয়ারে। ফলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সেভাবে পরিযায়ীদের দেখা মেলেনি সাঁতরাগাছির পাখিরালয়ে। তখন বিভিন্ন মহল বিভিন্ন আশঙ্কার কথা শুনিয়েছিল। যদিও ঝিল সাফাইয়ের পর জানুয়ারির শুরু থেকেই দলে দলে পরিযায়ী পাখি ভিড় জমাতে থাকে সাঁতরাগাছিতে। তাদের সংখ্যা জানতে শনিবার প্রকৃতি সংসদের তরফে পাখি গণনার কাজ করা হয়। এদিনের হিসেব বলছে, সাঁতরাগাছিতে চলতি মরশুমে পরিযায়ী সংখ্যা ৬৭৪২টি। গতবারের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার বেশি, কারণ গত মরশুমে পাখি এসেছিল ৫৪০০টির আশেপাশে। প্রাথমিকভাবে এই সংখ্যা ভরসা দিলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পক্ষীবিশারদরা। কারণ এদিনের গণনা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, বিদেশি প্রজাতির সংখ্যা কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। গাডয়াল নামের যে পাখি এক সময় প্রায় ৩০টির কাছাকাছি আসত, এবার তাদের সংখ্যা মাত্র আট। বাকিগুলির হিসেব বলছে, নর্দান পিনটেল ১টি, কমন মোরহেন ৭টি, ব্রোঞ্জ উইনজেড ১২টি, পন্ড হেরন ১৪টি, ক্যাটেল এগ্রেট ১৩, লিটিল কর্মরান্ট ২টি, ইন্ডিয়ান কর্মরান্ট ১টি, পার্পল হেরন ১টি, হোয়াইট ব্রেথহেড ওয়াটারহেন ১টি, হোয়াইট থ্রিটেড কিংফিশার ১টি, হোয়াইট ওয়াগটেল ২টি, বর্ন শ্যালো ২টি এসেছে। আর সবচেয়ে বেশি এসেছে দেশি পরিযায়ী লেসার হুইসলিং ডাক। এই বছরের হিসেব অনুযায়ী তাদের সংখ্যা ৬৬৭৪, যা আগের বারের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এছাড়াও একটি মাত্র বিরল প্রজাতির পাখি, গ্রে হেডেড সোয়াম্প হেন দেখা গিয়েছিল কয়েকদিন আগে।

হিসেব অনুযায়ী, দেশি পরিযায়ী বাড়লেও কমেছে বিদেশি অতিথিদের সংখ্যা। কেন এই হ্রাস? পক্ষী বিশারদ অর্জন বসু রায় বলেন, বেশ কয়েকটি কারণ আমরা বলতে পারি। প্রথমটি হল উন্নয়ন। চারপাশে আলো এত বেড়ে যাওয়ার কারণে লাইট সার্কেলটা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে যে পাখিগুলো দিনের বেলা সাঁতরাগাছির জলে কাটানোর পর রাতে ১০ কিলোমিটার দূরের গ্রামে বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদের খোঁজে যেত, তারা সমস্যায় পড়ছে। কারন গ্রামে এখন সর্বত্র বিদ্যুৎ রয়েছে। ফলে আমরা সাঁতরাগাছি ঝিল ঠিকঠাক রাখলেও তাদের জীবনধারণে সমস্যা হচ্ছে।

এছাড়া এই পাখিরা কয়েক হাজার মাইল পথ অতিক্রম করে এখানে আসে। এই দীর্ঘ পথে দূষণ সহ নানান সমস্যা দেখা দেওয়ার কারণে পাখিদের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, শহর লাগোয়া এলাকায় আলো বেশি থাকায় পাখিরা বিভিন্ন ভাগে ভেঙে গিয়ে গ্রামের একাধিক ছোট জলাশয় নেমে পড়ছে। তবে যেহেতু দেশি পরিযায়ীর সংখ্যা বাড়ছে, সেটি কিছুটা ভরসার জায়গা। পাখিরালয় রক্ষণাবেক্ষণে আমাদের যে কোনও ত্রুটি থাকছে না, এই সংখ্যা বৃদ্ধি তার প্রমাণ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Migratory Bird, #Santragachi

আরো দেখুন