দেশ বিভাগে ফিরে যান

২৫ মার্চের পর বন্ধ স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প! ডাক বিভাগের নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক

March 22, 2022 | 2 min read

সঞ্চয় প্রকল্প কেনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মার্চ মাস। আর্থিক বছর শেষে আয়কর বাঁচাতে অনেকে শেষ লগ্নে বিনিয়োগ করেন। সেক্ষেত্রে ডাকঘরের সঞ্চয় প্রকল্পগুলিই বেশি জনপ্রিয়। অথচ ডাক বিভাগেরই একটি নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে সব নতুন সঞ্চয় প্রকল্প চালু করতে হবে। অর্থাৎ, চলতি অর্থবর্ষে তারপর আর ডাকঘরের প্রকল্পে লগ্নি করা যাবে না বলেই মনে করছেন ডাক বিভাগের কর্তাদের একাংশ। কর্মকর্তাদের একাংশ বলছেন, মার্চের একেবারে শেষ লগ্নের হুড়োহুড়ি আকটাতেই এই নির্দেশিকা। যদিও সেই যুক্তি মানতে নারাজ পোস্টাল এজেন্টরা। তাঁদের বক্তব্য, প্রতিবারই অর্থবর্ষ শেষের চাপ থাকে। কিন্তু কখনও এমন নির্দেশিকার কথা শোনেননি তাঁরা। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেরই বক্তব্য, চলতি মাসের শেষের দিকে দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। তাতে অংশ নেওয়ার কথা কর্মী ইউনিয়নগুলির। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ পবিষেবা পেতে হয়রানির শিকার হতে পারেন। কারণ পোস্ট অফিসগুলি কার্যত বন্ধ থাকবে। এই দিকগুলি মাথায় রেখেই নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। ডাক বিভাগের পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল জে চারুকেশী জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন। 


ব্যাঙ্কের জমা প্রকল্পগুলির চেয়ে সুদ বেশি মেলে ডাকঘরের সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে। গত এক বছরের উপর সেগুলিতে সুদের হার একই রেখেছে কেন্দ্র। ফলে আয়কর বাঁচাতে অনেকেরই ভরসা টার্ম ডিপোজিট, মান্থলি ইনকাম স্কিম বা এমআইএস, সিনিয়র সিটিজেন্স সেভিংস স্কিম, সুকন্যা সমৃদ্ধি, পিপিএফ বা ন্যাশনাল সেভিংস স্কিমের মতো প্রকল্পগুলি। ডাক বিভাগের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নতুন সঞ্চয় প্রকল্প খুলতে যে ফর্মগুলি নেওয়া হয়েছে, সেগুলি চালু করতে হবে ২৫ তারিখের মধ্যে। এর অর্থ কী? দপ্তরের কর্তারা বলছেন, বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পোস্ট অফিস গ্রাহকের সঞ্চয় প্রকল্পের ফর্ম জমা নেয় ঠিকই, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি চালু করে না। অথচ যেদিন ফর্ম জমা পড়ে, সেদিন থেকেই প্রকল্পগুলিতে সুদ জমা পড়ার কথা। ওই প্রকল্পগুলি চালুর সময়সীমাই বাঁধা হয়েছে ২৫ তারিখ। তবে এই যুক্তি উড়িয়ে দিয়েছেন এজেন্টরা। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল সেভিংস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস বলেন, ‘বিভিন্ন জেলার এজেন্টেদের তরফে খবর পাচ্ছি, ২৫ তারিখের পর আর কোনও পোস্ট অফিস সঞ্চয় প্রকল্প জমা নেবে না। পোস্টমাস্টাররাই সেকথা জানিয়ে দিচ্ছেন। আরও একটি বিষয় হল, গ্রাহক যেদিন সঞ্চয় প্রকল্প কিনবেন, স্বাভাবিক নিয়মে সেদিন থেকেই তা চালু হওয়ার কথা। এর জন্য দিনক্ষণ বেঁধে দিয়ে নির্দেশিকা দিতে হয়? ২৫ তারিখের পর যদি কেউ বিনিয়োগ করতে চান, তাঁর কী হবে? পোস্টমাস্টাররা তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না কেন? এই লগ্নিকারীদের জন্য তো ছ’দিনের কোপ পড়ে গেল! আমাদের বলা হয়েছে, ২৬ মার্চের মধ্যে রেকারিং ডিপোজিটের গ্রাহকের তালিকা জানিয়ে দিতে হবে। এমন কথাও কোনও দিন শুনিনি। কেন এসব হবে?’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পোস্টমাস্টারের কথায়, ২৬ তারিখ শনিবার। পরের দিন রবিবার। ২৮ ও ২৯ তারিখ দু’দিনের ধর্মঘটে পোস্ট অফিসগুলিতে কাজ হবে না। শুনছি, ‘ইয়ার এন্ডিং’-এর কারণে বছরের শেষ দু’দিন বিভাগীয় ‘সিস্টেম’ বন্ধ থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে আর নতুন প্রকল্প নেওয়ার সুযোগ কই?      

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#India Post, #post office, #India

আরো দেখুন