অধরা অস্কার! প্রত্যাশা জাগিয়েও চূড়ান্ত পর্ব থেকে ফিরে এল রাইটিং উইথ ফায়ার
অধরা অস্কার। সুস্মিত ঘোষ ও রিন্টু টমাস পরিচালিত ডকুমেন্টরি ‘রাইটিং উইথ ফায়ার’-কে ঘিরে আবারও বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছিল বাঙালি। কিন্তু স্বপ্নপূরণ হল না। সোমবার ভোরেই বাঙালির নির্ঝরে স্বপ্নভঙ্গ। সত্যজিতের হাত ধরে প্রথম অস্কারের স্বাদ পেয়েছিল বাঙালি। চলচ্চিত্রের দুনিয়ার সর্বোচ্চ পুরস্কার হল অস্কার। বাঙালির প্রায় তিন দশক অপেক্ষা আজও শেষ হল না!
তবুও বাংলার জন্য গর্বের দিন আজ। অস্কারের চূড়ান্ত পর্বে সেরা ফিচার বিভাগে মনোনীত হওয়ার পর থেকেই, বাঙালি পরিচালকের ডকুমেন্টরি ঘিরে উন্মাদনার পারদ চড়ছিলই। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনন্য নজির স্থাপন করলেন সুমিত ঘোষ ও তাঁর বন্ধু রিন্টু টমাস। ভারতের অন্য দুটি ছবি, ‘জয় ভীম’ও ‘মরক্কর’ চূড়ান্ত তালিকা থেকে ছিটকে যাওয়ার পর থেকে রাইটিং উইথ ফায়ারকে ঘিরে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল।
গত বছরের সেরা ডকু ফিচার বিভাগে জায়গা করে নিয়েছিল পরিচালক রিন্টু থমাস এবং সুমিত ঘোষের ছবি ‘রাইটিং উইথ ফায়ার’।৯৪তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছিল ৮ই ফেব্রুয়ারি। তারপর থেকেই রাইটিং উইথ ফায়ার নিয়ে চর্চা শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছর জানুয়ারিতে হওয়া সানডান্স চলচ্চিত্র উৎসবে স্পেশ্যাল জুরি অ্যান্ড অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছিল ছবিটি। তারপর থেকেই ডকু ফিচারটি উঠে আসে সাংবাদ শিরোনামে। তারপর একের পর এক মঞ্চে প্রশংসিত হয়েছে এই ছবি। এখনও পর্যন্ত মোট ২০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছে ‘রাইটিং উইথ ফায়ার’। বিশ্বের চলচ্চিত্র জগতে নানান জায়গায় খবরের শিরোনামে থেকেছে এই ছবি। রাইটিং উইথ ফায়ার সম্পর্কে ওয়াশিংটন পোস্ট তরফে প্রশংসা করে লেখা হয়েছিল, সাংবাদিকতা নিয়ে কার্যত সর্বকালের সেরা ছবি এটি। বিদেশের একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে রাইটিং উইথ ফায়ারের জন্য প্রশংসা পেয়েছেন এই পরিচালক জুটি।
উত্তরপ্রদেশের একটি সংবাদপত্র খবর লহরিয়া’র উপর ভিত্তি করেই তথ্যচিত্রটি নির্মান করেছেন সুস্মিত এবং রিন্টু। প্রসঙ্গত, এটি দলিত মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত ভারতের একমাত্র সংবাদপত্র। ‘রাইটিং উইথ ফায়ার’ তথ্যচিত্রে তাদের কথাই তুলে ধরা হয়েছে।উত্তরপ্রদেশের প্রত্যন্ত এক গ্রাম থেকে এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পরিচালনা করেন দলিত সাংবাদিক মীরা দেবী সঙ্গে তার দুই সহকারী শ্যামকলি এবং সুনীতা। পরিশ্রম, প্রতিদিনের সংগ্রাম এবং দলিত তকমা নিয়েই মোবাইলের মাধ্যমে খবর জোগাড় করতেন তারা। ২০১৬ সালে মীরাদেবীর সাংবাদিকতার জীবন নিয়ে ছবি বানানোর কাজ শুরু করেছিলেন সুস্মিত এবং রিন্টু। এখন সেই ছবিই বিশ্ব বন্দিত।
যদিও আজ কাঙ্খিত সাফল্য এল না সুমিত, রিন্টুদের ঝুলিতে, তবুও এ ছবি নজির হয়ে থাকবে। সাহসী সাংবাদিকতার যে দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন মীরাদেবীরা, তা বিশ্বের দরবারে নিয়ে এসেছে দুই পরিচালক। সেই কারণে তাঁদের কুর্নিশ জানায় দৃষ্টিভঙ্গি।