দেশ বিভাগে ফিরে যান

পেট্রপণ্যে ৩০০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে অবিজেপির রাজ্যদের ভ্যাট কমানোর সাফাই মোদীর?

April 27, 2022 | 2 min read

নরেন্দ্র মোদী, ছবি সৌজন্যে- টাইমস অফ ইন্ডিয়া

করোনা সংক্রান্ত বৈঠককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করলেন নরেন্দ্র মোদী। গত কয়েক মাসে পেট্রল-ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হয়েছে। সেই জনমতের অভিমুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতেই কি অবিজেপি শাসিত রাজ্যের কোর্টে বল ঠেললেন মোদী? প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।

জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নিয়ে এবার রাজ্যকে আক্রমণ করে দায় এড়ালো কেন্দ্র৷ কিন্তু আদপে চিত্রটা ঠিক কী? নিত্যদিন পেট্রল ডিজেলের দাম বেড়েই চলেছে। মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ এবং এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ মিলিয়ে ১৫ দিনে ১৬ বার পেট্রপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছিল। পেট্রপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি নতুন কিছু নয়, বিগত এক দেড় বছর যাবৎ বেড়েই চলেছে দাম। যার নেপথ্যে রয়েছে মোদী সরকার।

প্রথমত, পেট্রপণ্যের উপর ৩০০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।

দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রপণ্যের দাম কমেলেও ভারতে তা কমানো হয় না, বলা ভাল মোদী সরকার তা কমায় না।

তথ্য বলছে, ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম আর ১১৩ ডলারে নেই। বরং তা নেমে এসেছে ১০৬.৫৬ ডলারে। মার্কিন লাইট ক্রুডের দরও পাঁচ শতাংশ কমে প্রায় ১০০ ডলার। চীনের সাংহাইয়ে লকডাউন এবং ইউক্রেনে যুদ্ধ ঝিমিয়ে পড়ার কারণেই তেলের দর কমছে বলে জানা গিয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের শান্তি প্রক্রিয়া যত এগবে, ততই স্থিতিশীল হবে বিশ্ব বাজার। অথচ, তার রেশ ভারতে আসছে না।

প্রশ্ন কিন্তু দাম কমানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়েই। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার সময় ব্যারেল পিছু তেলের দর ছিল ১১৫ ডলার। তখন ভারতে পেট্রল ছিল লিটার পিছু ৭৯.২৬ টাকা। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে সেই দর ২০১৪ সালের তুলনায় কম। অথচ ১০০ টাকার অনেক বেশি দাম পেট্রলের। বিরোধীদের অভিযোগ, শুল্ক বাড়িয়ে মুনাফা লুটছে কেন্দ্র। আর তার চরম দাম চোকাতে হচ্ছে দেশবাসীকে।

কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত আটবছরে সেন্ট্রাল এক্সাইজ ডিউটির নামে অতিরিক্ত কর মাশুল চাপিয়ে ২৬ লক্ষ কোটি টাকা। বিগত পাঁচ বছরে এই আয়ের পরিমান ১৭ লক্ষ ৩২ হাজার ২৪১ কোটি টাকা।

২০২১-২২ অর্থবর্ষে বিদেশ থেকে মোট ১৭৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করা হয়েছে। যার মধ্যে রাশিয়া থেকে এসেছে ০.৪১৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন। অর্থাৎ ০.২ শতাংশ। যুদ্ধের কারণ তেলের দাম বাড়ার অভিযোগও খাটে না।
কেন্দ্রের তথ্য বলছে, বিজেপি সরকার পেট্রোপণ্যের উপর সেসসহ শুল্ক বাবদ ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে যথাক্রমে ২,২৩,০৫৭ কোটি টাকা এবং ৩,৭২,৯৭০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। বাজেট অনুযায়ী চলতি অর্থবর্ষে (২০২১-২০২২) সরকার এক্সাইজ ডিউটি বাবদ ৩,৩৫,০০০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। যদিও বিগত বছরের নভেম্বরে নামমাত্র শুল্ক হ্রাস করেছিল বিজেপি সরকার, কিন্তু হ্রাস পাওয়ার পর নতুন মূল্য চলতি অর্থবর্ষ থেকে কার্যকারী হবে কিনা, তা স্থির হয়নি বলেই সাংসদে জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। যা বিজেপি সরকারের দ্বিচারিতাকে ফের একবার স্পষ্ট করল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #bjp, #Tax, #VAT

আরো দেখুন