মুখ থুবড়ে পড়েছে ডাক বিভাগের মাধ্যমে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার উদ্যোগ
‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়তে ভারতীয় ডাক বিভাগ অনলাইন বেচাকেনার উদ্যোগ নিয়েছিল। এর ফলে দেশের ছোট শিল্প সংস্থা বা প্রান্তিক শিল্পীরা উপকৃত হবে বলে দাবি করা হয়েছিল। ঢাকঢোল পিটিয়ে চালু হয়েছিল সেই ই-কমার্স ব্যবসা। কিন্তু সাড় তিন বছর যেতে না যেতে ব্যবসার ঝাঁপ বন্ধ করে দিল মোদী সরকার। মুখ থুবড়ে পড়েছে ডাক বিভাগের মাধ্যমে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার উদ্যোগ। ‘আত্মনির্ভরতার ‘দম্ভে’র এহেন পরিণতিতে আশাহত ডাক বিভাগের আধিকারিকরাই।
দীর্ঘদিন সময় দেশের ডাক বিভাগ নানা কারণে ধুঁকছে। দেশে প্রায় ১ লক্ষ ৫৬ হাজার পোস্ট অফিস রয়েছে। চিঠিপত্র-সহ ডাক বিভাগের নিজস্বপরিষেবার চাহিদা দীর্ঘদিন ধরেই নিম্নমুখী। সেভিংস অ্যাকাউন্ট, পিপিএফ বা রেকারিং ডিপোজিটের মতো স্বল্প সঞ্চয়গুলির এক্তিয়ার অর্থমন্ত্রকের। কমিশনের ভিত্তিতে ডাক বিভাগ লেনদেন সংক্রান্ত পরিষেবা দেয়।
২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিকল্প রোজগারের ভাবনা থেকে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করে ডাক বিভাগ। গঙ্গাজল, ই-স্ট্যাম্পের মতো পরিষেবা দিয়ে শুরু হয় এই ব্যবসার পথ চলা। এর পর আস্তে আস্তে সাধারণ মানুষকেও এই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে নিজেদের পণ্য বিক্রি করার সুযোগ দেওয়া হয়। দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেরও বিভন্ন জেলার শিল্পীরা তাঁদের হাতের কাজ বিক্রি শুরু করেছিলেন ডাক বিভাগের ই-কমার্স পোর্টালের মাধ্যমে। কিন্তু বেসরকারি সংস্থাগুলির দাপটের কাছে মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি ডাক বিভাগ।
ডাক বিভাগের কর্তার বলছেন, পেশাদারিত্বের চরম অভাবের কারণেই এই অবস্থা। অথচ ডাক বিভাগের যে বিপুল পরিকাঠামো রয়েছে, তা সুষ্ঠভাবে ব্যবহার করলে এই উদ্যোগ সফল হতে পারত। ডাক বিভাগ ব্যর্থ হয়েছে, অথচ তাদের পরিকাঠামোকেই কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করছে দেশের নামজাদা অনলাইন শপিং সংস্থাগুলি।
ডাক বিভাগের কর্মীদের আক্ষেপ, বেসরকারি সংস্থাগুলি আমাদের পরিকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা বাড়াচ্ছে, অথচ ইন্ডিয়ান পোস্ট সেই পরিকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের উদ্যোগটি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারল না!