দেশ বিভাগে ফিরে যান

অতিমারীর বছরে দারিদ্র্যতার কবলে পড়েছে ৫.৬ কোটি ভারতীয়, বলছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক

October 6, 2022 | 2 min read

প্রতীকী ছবি, সৌজন্যেঃ Rupak De Chowdhuri/Reuters

দারিদ্র্যের আঁধারে ডুবেছে ভারত। চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এল বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে। ৫ অক্টোবর প্রকাশিত ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে অর্থাৎ অতিমারীর বছরে মোট ৫.৬ কোটি ভারতীয় দারিদ্র্যতার কবলে পড়েছে। থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমির করা সমীক্ষায় এমন তথ্য-পরিসংখ্যান উঠে এসেছে। সিএমআইই বাড়িতে বাড়িতে এই সমীক্ষা চালিয়েছে। যদিও সিএমআইইয়ের কনজিউমার পিরামিড সমীক্ষার ফলাফলগুলি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।

বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানাচ্ছে, ২০১১ সাল থেকে ভারত সরকার সরকারিভাবে দেশের দারিদ্রতা সংক্রান্ত কোনরকম তথ্য-পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি, সেই কারণেই বিশ্বব্যাপী এবং আঞ্চলিক দারিদ্রতার অনুমানের শূন্যস্থান পূরণ করতেই সিএমআইইয়ের সমীক্ষার তথ্য-পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়েছিল। যদিও আর্থিক সংস্থার দাবি, ভারতে খাতায় কলমে দারিদ্রতার যে তথ্য পরিসংখ্যান দেখানো হচ্ছে, বাস্তবে তার পরিমাণ আরও অনেক বেশি। ইন্টারন্যাশনাল মানেটারি ফান্ডে পেশ করা এক গবেষণা পত্রে দেখানো হয়েছিল, ২০২০ সালে ২.৩ কোটি ভারতীয় দারিদ্র্যের কবলে পড়েছেন। আইএমএফের গবেষণা পত্রটি লিখেছেন অর্থনীতিবিদ সুরজিৎ ভাল্লা, করণ ভাসিন এবং অরবিন্দ ভিরমানি। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পদ থেকে সুরজিৎ ভাল্লা পদত্যাগ করেছিলেন। এখন তিনি আইএমএফের ভারতের কার্যনির্বাহী পরিচালক পদে আসীন রয়েছেন।

অন্যদিকে, বিশ্বব্যাঙ্ক তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে; দারিদ্র্যের কবলে পড়া মানুষের চূড়ান্ত পরিসংখ্যা বেশি বা কম হতে পারে। করোনা ভাইরাসজনিত অতিমারীর কারণে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দুরীকরণ কর্মসূচি ধাক্কা খেয়েছে, সমীক্ষায় উঠে আসা নানান তথ্যে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই ধাক্কাকে রিপোর্টে ঐতিহাসিক বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২০ সালে করোনা অতিমারি বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের হারকে বাড়িয়ে ৯.৩ শতাংশে পৌঁছে দিয়েছে। ২০১৯ সালে যার পরিমাণ ছিল ৮.৪ শতাংশ। বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০১১ সাল ভারতের মূলত গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে। যদিও যে সামান্য পরিমাণে সামগ্রিক দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যতা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত পূর্বের অনুমানের চেয়েও কম। বিশ্ব ব্যাঙ্কের অনুমান ছিল, ২০১৭ সালে ভারতের জনসংখ্যার ১০.৪ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে থাকবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, ২০১৭ সালে দেশের মোট জনসংখ্যার ১৩.৬ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। বিশ্ব ব্যাঙ্ক আরও বলছে, ২০২০-২০১৯ সালে দেশের জনসংখ্যার ১০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করছিল। গ্রামীণ এলাকায় জনসংখ্যার ১২% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করত। অন্যদিকে, শহরাঞ্চলে জনসংখ্যার ৬ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার অধীনে ছিল।

বিশ্ব ব্যাঙ্ক দাবি করেছে, অতিমারি চলাকালীন সরকার গ্রামীণ অঞ্চলে ৮৫ শতাংশ মানুষকে এবং শহরাঞ্চলে বসবাসকারী ৬৯ শতাংশ মানুষের কাছে সরকারি প্রকল্পের পরিষেবাগুলি পৌঁছে দিতে পেরেছে। ​বিশ্ব ব্যাঙ্ক সাফ জানাচ্ছে করোনার কারণে দরিদ্র মানুষদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছিল। কারণ সর্বস্তরের মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে ডাহা ফেল করেছে মোদী সরকার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Corona pandemic, #Economy, #world bank, #Poverty, #Indians

আরো দেখুন