বিনোদন বিভাগে ফিরে যান

দু’দশক নেপালে জেলবন্দি থাকার পর এবার মুক্তি পেতে চলেছে ‘বিকিনি কিলার’ শোভরাজ

December 21, 2022 | 2 min read

প্রায় দু’দশক জেলবন্দি থাকার পর নেপালের জেল থেকে মুক্তি পেতে চলেছে ‘বিকিনি কিলার’ চার্লস শোভরাজ। সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট প্রায় শোভরাজের মুক্তির আবেদন মঞ্জুর করল।

কে এই শোভরাজ?

এই সিরিয়াল কিলার গোটা বিশ্বে এক চরম বিস্ময়! বহু ক্ষেত্রেই তার শিকার বিকিনি পরা মেয়েরা। যা তাকে এনে দিয়েছিল ‘বিকিনি কিলারে’র তকমা।

ভিয়েতনামের সবথেকে বড় শহর সাইগন, যার বর্তমান নাম হো চি মিন সিটি, সেখানে জন্ম চার্লসের। তার বাবা ভারতীয়, মা ভিয়েতনামের নাগরিক। কিন্তু তাঁরা একসঙ্গে থাকলেও তাঁদের বিয়ে হয়নি। এবং ভদ্রলোক চার্লসকে নিজের ছেলে বলেও স্বীকৃতি দিতে চাননি। এর মধ্যেই ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় দু’জনের। চার্লসের মা বিয়ে করেন ফ্রান্সের এক সেনানায়ককে। তিনি অবশ্য চার্লসকে দত্তক নিতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু ততদিনে বিচ্ছিন্নতার বীজ সেঁধিয়ে গিয়েছে তার রক্তের মধ্যে। ধীরে ধীরে নিজের পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যেতে থাকে চার্লস। হয়তো ততদিনে তার মনের মধ্যে অপরাধমনস্কতার মাছি ভনভন করতে শুরু করে দিয়েছে। স্কুলের বোর্ডিং থেকেও দুবার পালিয়েছিল সে। ফ্রান্স থেকে সাইগনে ফিরে যাওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। তা হয়ে ওঠেনি। বরং ধীরে ধীরে ডাকাতি, ড্রাগ কিংবা হিরের চোরাচালানের এক কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে তলিয়ে গিয়েছিল সে।

দ্য সার্পেন্ট সিরিজ়ে মোনিক ও চার্লস শোভরাজের ভূমিকায় জেনা ও রহিম।

সারা জীবনে অসংখ্য খুন করেছে চার্লস। সাত থেকে আটের দশকে ১২ থেকে ২৪টি খুনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আগেই বলা হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার শিকার হিপি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক তরুণ প্রজন্ম। গোয়েন্দাদের হিসেব বলছে, সিয়াটলের এক তরুণীই ছিল চার্লসের প্রথম শিকার। খুন করে যাকে থাইল্যান্ডের এক সমুদ্রখাঁড়িতে ভাসিয়ে দিয়েছিল সে। এরপর ক্রমেই নেপাল, থাইল্যান্ড ও ভারতে একের পর এক অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যেতে থাকে চার্লস শোভরাজের নাম।

শোভরাজ কথা বলতে পারত নানা ভাষায়। তার ব্যক্তিত্বের মধ্যে ছিল এক তীব্র চৌম্বক আকর্ষণ। বিশেষ করে মেয়েরা সহজেই আকৃষ্ট হয়ে পড়ত তার ব্যবহারে।

বিশ্বের অপরাধ মানচিত্রে অন্যতম কুখ্যাত এই ‘সিরিয়াল কিলার’ দিল্লিতে ৩ পর্যটককে বিষ খাওয়ানোর অপরাধে ভারতের তিহাড় জেলেও ছিলেন দীর্ঘ দিন। ১৯৮৬ সালে তিহাড় থেকেও পালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কিছু দিন পরেই গোয়ার এক রেস্তরাঁ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

১৯৭৫ সালে কাঠমান্ডুতে দুই পর্যটককে খুনের মামলায় শোভরাজকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন জেলের সাজা দিয়েছিল নেপালের আদালত। সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট প্রায় দু’দশক জেলবন্দি শোভরাজের মুক্তির আবেদন মঞ্জুর করল।

শোভরাজের রঙিন এই অপরাধীজীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু-সিরিজ, যার মধ্যে নেটফ্লিক্সের ‘দ্য সার্পেন্ট’।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Supreme Court of Nepal, #Sobraj, #Bikini Killer

আরো দেখুন