মহাসমারোহে বাংলাজুড়ে পালিত হল রামকৃষ্ণদেবের ১৮৮ তম আবির্ভাব তিথি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মঙ্গলবার অর্থাৎ গতকাল দক্ষিণেশ্বর মন্দির, বেলুড় মঠসহ মঠ ও মিশনের প্রতিটি কেন্দ্রে পালিত হল রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ১৮৮ তম আবির্ভাব। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ঠাকুরের ঘরে বিশেষ পুজো করা হয়। ভক্তরা ভিড় করেছিলেন সেখানে। বেলুড় মঠে গতকাল ভোর সাড়ে চারটেয় ঠাকুরের সামনে মঙ্গল আরতি হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে বেদপাঠ ও স্তব গান চলে। সন্ন্যাসী ও ভক্তরা খোল করতালসহ মঠ চত্বরে উষা কীর্তন করেন। বিশেষ পুজোও হয়েছে। রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনে ২৫ হাজার মানুষ প্রসাদ গ্রহণ করেন। সন্ধ্যা আরতি হয়। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে আলোচনা করা হয়। বিভিন্ন মঠে রামকৃষ্ণ বন্দনা, রামকৃষ্ণ কথামৃত পাঠ, ভক্তিগীতি, বংশীবাদন, ভজন, যন্ত্রসঙ্গীত, ধর্মসভাসহ নানা অনুষ্ঠান হয়।
বরাহনগরে চলল ঠাকুরের পাদুকা পুজো। ১৮৮৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কোনও একদিন ঠাকুরের চিকিৎসা করতে এসেছিলেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক কবিরাজ মহেন্দ্রনাথ পাল। সে’দিনই পাদুকাটি মহেন্দ্রনাথকে দেন ঠাকুর, তিনি আসেন তাঁর বরানগরের বাড়িতে। তারপর থেকে বরাহনগরে নিত্য পূজিত হচ্ছেন ঠাকুরের পাদুকা। আজও বাক্সে যত্ন করে রাখা রয়েছে খড়ম জোড়া, খড়ম নিয়মিত পুজোও পায়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পুজো পেয়ে থাকে। বিভিন্ন শুভদিনে পাদুকা বরাহনগরের বাড়ি থেকে কাচের বাক্সে করে গাড়িতে রওনা দেয়। যেখানেই যাক না কেন, সন্ধ্যার আগে ঠাকুরের পাদুকা ফিরিয়ে আনা হয়। সন্ধ্যা আরতির পর ভোগ নিবেদন হয়। তারপর ঠাকুরকে শয়ন দেওয়া হয়। সেই নিয়মের বিন্দুমাত্র হেরফের হয় না।
বরাহনগর আঞ্চলিক ইতিহাস গ্রন্থে বলছে, রামকৃষ্ণদেবের মৃত্যুর পর ১৩০৫ বঙ্গাব্দে মহেন্দ্রনাথ শ্রীপঞ্চমী তিথিতে নিজের বসত বাড়িতে পাদুকা ও ঠাকুরের পটে নিত্য পুজোর ব্যবস্থা করেন। বাড়ির নাম রাখা হয়েছিল শ্রীরামকৃষ্ণ পাদুকা ভবন। মহেন্দ্রনাথের প্রপৌত্র স্বপনকুমার পাল নতুন করে মন্দির তৈরি করেছিলেন। গতকাল সেখানেও মহাসমারোহে পূজিত হয়েছে পাদুকা।