দেশ বিভাগে ফিরে যান

ওড়িশার রেল দুর্ঘটনার এক মাস পরও নিকটজনের মরদেহ পাওয়ার অপেক্ষায় বহু

July 7, 2023 | 2 min read

ছবি সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও সব মৃতদেহ স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখনও ৫২ জনের মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে পড়ে আছে। নিহতদের নিকটজনেরা অপেক্ষা করে আছেন, কবে পাবেন মরদেহ।

গত ২ জুন ওড়িশার বালাসোরের বাহাঙ্গাবাজার স্টেশনের কাছে রেল দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতে এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনা ছিল এটি। সেখানে কলকাতা থেকে চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেস একটি পণ্যবাহী ট্রেনে ধাক্কা দিয়েছিল। ঠিক একই সময় বিপরীত দিক থেকে যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস সেখানে চলে এলে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৯৩ জন মারা যান এবং এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হন। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকার কমিটি গঠন করেছে। সেই তদন্ত এখনো চলছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।

এখনো অনেকেই স্বজনের লাশ খোঁজ করছেন। যেমন শিবচরণের কথা বলা যেতে পারে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। গত এক মাস ধরে ওডিশার ভুবনেশ্বর শহরে থাকছেন তিনি।

শিবচরণ যে অতিথি শালায় থাকছেন সেটার পাশেই সরকারি একটি হাসপাতাল রয়েছে। মরদেহগুলো সেখানেই রাখা হয়েছে। সেখানকার হিমঘরে এই দুর্ঘটনার ৫২টি লাশ রাখা হয়েছে। কিন্তু এসব মরদেহের অনেকেরই মুখ চেনা যাচ্ছে না। অনেক মরদেহ দেখে বোঝার উপায় নেই এটা কার মরদেহ। শিবচরণ এই হাসপাতালে প্রতিদিন যান, এটা ভেবে যে আজ হয়তো তিনি ভাইয়ের লাশের সন্ধান পাবেন।

শিবচরণ তাঁর ভাইয়ের কাপড়চোপড় খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু ভাইকে পাননি। দুর্ঘটনার ঠিক আগের মুহূর্তে ভাই কৃশ্রার সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর।

অন্য অনেকের মতো ভাইয়ের মরদেহ পেতে ডিএনএ নমুনা দিয়েছেন শিবচরণ। তবে সেই পরীক্ষার ফল এখনো আসেনি। সংবাদসংস্থা বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘কখন এই পরীক্ষার রিপোর্ট আসবে তা কেউ বলে না।’ তবে ভাইয়ের মরদেহ না নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরবেন না। ফলে এক মাসের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছেন তিনি। শিবচরণ বলেন, ‘আমরা চাই তাঁর (ভাইয়ের) শেষকৃত্যটা ঠিকঠাক মতো হোক।’

ওডিশার এই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন আনজারুল হক। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান বেঁচে গেছেন। তাঁদের বাড়িও পশ্চিমবঙ্গে। আনজারুলের লাশ পেতে অপেক্ষায় তাঁর পরিবার। এ জন্য আনজারুলের ভগ্নিপতি মোহাম্মদ করিম এখন ভুবনেশ্বরে রয়েছেন। তিনি প্রতিদিন হাসপাতালে যান। মরদেহ পেতে আনজারুলের ভাই ডিএনএ নমুনা দিয়েছেন। এখন রিপোর্টের অপেক্ষা।
মোহাম্মদ করিম বলেন, ‘এক মাস পার হয়ে গেছে; কিন্তু ভাইয়ের মরদেহ কোথায় আছে এখনো আমরা জানি না।’
দিন গড়াচ্ছে আর মরদেহ পাওয়ার আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে। তবুও অনেকে রয়েছেন অপেক্ষায়।

রেল কর্মীদেরই একাংশ মনে করছেন, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের কাছে মরদেহ পৌঁছে দেওয়া কঠিন হবে। ফলে এখন কিছু প্রশ্ন উঠছে। সেগুলো হলো, আর কত দিন লাগবে এসব মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে। আরেকটি হলো, যেসব মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হবে না সেগুলোর কী হবে?

অনেকেই এখন পরামর্শ দিচ্ছেন, এসব মরদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হোক। কিন্তু ইস্ট কোস্ট রেলওয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ সাহু বিবিসি’কে জানিয়েছেন, ডিএনএ নমুনার তথ্য না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#train accident, #coromandel express, #Odisha Train Accident, #Coromandel Express accident, #coromandel express tragedy

আরো দেখুন