কোটি কোটি জন ধন অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয়, তবুও মোদী জয়গান গেয়েই চলেছেন!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সারা দেশের মানুষকে ব্যাঙ্কের ছাতার তলায় নিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর স্বপ্নের পরিকল্পনা জন ধন যোজনা। এই যোজনার আওতায় সাধারণ মানুষ বিনামূল্যে ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট খুলতে পারেন। সারা দেশে প্রায় ৫০ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার আওতায় এই অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছেন।
কিন্তু তাতে টাকা কোথায়? কোটি কোটি পাসবুকে লেখা থাকছে শূন্য! ডরমেন্ট বা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে আরও কয়েক কোটি অ্যাকাউন্ট। তবু ‘জনধন’ প্রকল্পের সাফল্যের জয়গান গেয়েই চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!
প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনায় গরিবের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চালু করার গতি যেন রকেটকেও হার মানিয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে এই প্রকল্পে মোট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল সাড়ে ৪৭ কোটি। মার্চে এক ধাক্কায় তা পৌঁছে যায় ৪৯ কোটিতে। আর এই আগস্টে ছাড়িয়ে গেল ৫০ কোটি। অর্থাৎ প্রতি মাসে যেন লক্ষ লক্ষ অ্যাকাউন্ট খোলার উৎসব চলছে। কিন্তু এটা যদি সাফল্য হয়, তাহলে অস্বস্তিকর তথ্য হল, এর মধ্যে সাড়ে ৪ কোটি অ্যাকাউন্টেই কোনও টাকা জমা নেই। অর্থাৎ জিরো ব্যালান্স। আরও প্রায় ১০ কোটি অ্যাকাউন্টে গত দু’বছর ধরে কোনও লেনদেন হয়নি। সেগুলি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পড়ে। আর এই ৫০ কোটি অ্যাকাউন্টে মোট জমার পরিমাণ ২ লক্ষ ৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, গড়ে মাত্র ৪ হাজার টাকা। একথা বলছে খোদ সরকারি তথ্যই।
তা সত্ত্বেও এদিন রোজগার মেলায় প্রধানমন্ত্রী মোদি জনধন প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে ছিলেন রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, এই যোজনা গোটা সমাজকে বদলে দিয়েছে। তাঁর সুরেই সরকারি বিবৃতিতে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে জনধন অ্যাকাউন্ট কী ও কেন! কিন্তু এই প্রচারের ঢক্কানিনাদের আড়ালেই জানা যাচ্ছে, গত ১৬ আগস্ট পর্যন্ত পাওয়া হিসেব অনুযায়ী মোট জনধন অ্যাকাউন্টের ৮ শতাংশে একটিও টাকা জমা নেই। সবথেকে উদ্বেগজনক তথ্য, এই হার কমছে না। ঠিক এক বছর আগে, ২০২২ সালের আগস্ট মাসেও সাড়ে ৪ কোটি অ্যাকাউন্ট ছিল জিরো ব্যালান্স সম্বলিত। এখনও তাই। ফলে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করা এই প্রকল্প যে অত্যন্ত সফল একটি পদক্ষেপ, সেটি প্রমাণ করার তাগিদে তাবৎ ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে বছরভর টার্গেট দেওয়া হচ্ছে। অর্থমন্ত্রকের লাগাতার চাপেই অ্যাকাউন্ট চালু হচ্ছে কোটি কোটি। অথচ সেখানে গরিব মানুষ কত টাকা রাখতে পারছে? সেই প্রশ্নটাই এখন সামনে চলে আসছে।