অসুস্থতার কারণে প্রতিদিনই দেশে বেড়ে চলেছে আত্মহত্যার ঘটনা, বলছে রিপোর্ট
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: বেশির ভাগ আত্মহত্যার সঙ্গেই মানসিক রোগের সম্পর্ক রয়েছে। বিষণ্নতা, ব্যক্তিত্বের সমস্যা, সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, মাদকাসক্তি ইত্যাদি মানসিক রোগের যথাযথ চিকিৎসা না করালে এবং সম্পর্কজনিত জটিলতা, ব্যর্থতা ইত্যাদি কারণে আত্মহত্যার ঘটনা বেশি ঘটে থাকে।
পাশ্চাত্যে মধ্য বা শেষ বয়সী মানুষেরা একাকিত্বে ভোগেন। এ কারণে সেখানে ৪০-৫০ বছর বয়সী একাকী পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। কিন্তু এখন ভারতেও অসুস্থতার কারণে বেড়েই চলেছে একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা।
কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) রিপোর্ট জানাচ্ছে চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান—শুধু ২০২২ সালেই দেশে ৩১ হাজারের বেশি মানুষ অসুস্থতার কারণে বেছে নিয়েছেন আত্মহননের পথ। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে পারিবারিক অশান্তির পরই রয়েছে অসুস্থতা। মোট আত্মহত্যার ১৮ শতাংশেরও বেশি। আরও চিন্তার বিষয় হল, অসুস্থতাজনিত আত্মহননের এই বিপুল সংখ্যক ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কারণ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে মানসিক অসুস্থতা। প্রায় অর্ধেক (১৪,৬০০) ঘটনার নেপথ্যেই রয়েছে রোগীর নানা ধরনের মানসিক সমস্যা। দীর্ঘস্থায়ী আরও নানা অসুখের কারণে ‘নিজেকে শেষ করার পথ’ বেছে নিয়েছেন ১৪,৪৩১ জন মানুষ। ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতেও ১,২৫১ জন নিজের জীবন শেষ করেছেন। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ায় আত্মঘাতী হয়েছেন হাজারের বেশি মানুষ। আর এইচআইভি এবং বিভিন্ন যৌনরোগের জ্বালা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে আত্মহননের পথ বেছেছেন ১৫৬ জন।
মনরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অসুস্থদের বড় অংশই ডিপ্রেশনের শিকার। অবসাদে আবেগের কথাই বেশি শুনতে থাকে মানুষ। মস্তিষ্কের যুক্তিবুদ্ধি দিয়ে চিন্তা করার অংশটি কমজোরি হয়ে পড়ে। তাই পরিণতি এমন ভয়ানক হচ্ছে। আবার অনেকে বলছেন, মানসিক স্বাস্থ্যের এই ভয়ংকর দিক আমাদের সমাজ এখনো পুরোপুরি অনুধাবন করতে পারেনি। অনেকেই ধরে নেন, ‘এটি একটি সাময়িক অসুবিধা মাত্র, সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে।’ বাইরে থেকে তারা বুঝতে পারেন না দিনে দিনে কীভাবে একজন মানুষ অবর্ণনীয় যান্ত্রনায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছেন। কাউন্সেলিংয়ের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে এখন অনেক আলাপ–আলোচনা হয় ঠিকই কিন্তু এর প্রয়োগ এখনো ব্যাপকতা লাভ করেনি।