বরানগর থেকে বাস পুরী রওনা দিয়েছে চৈতন্যদেবের প্রিয় খাবার নিয়ে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ইতিহাস বলছে, চৈতন্য মহাপ্রভু পানিহাটিতে প্রথম পা রেখেছিলেন ৯২১ বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসের কৃষ্ণা দ্বাদশীতে। তিনি উঠেছিলেন তাঁর প্রিয় পার্ষদ রাঘব পণ্ডিতের বাড়িতে। রাঘবের বাল্যবিধবা বোন দময়ন্তীদেবী নানা পদ রান্না করে মহাপ্রভুকে খাওয়ান। সেই রান্নার স্বাদে মোহিত হয়ে স্বয়ং চৈতন্যদেব প্রশংসায় ভরিয়ে দেন। চৈতন্য চরিতামৃতেও তার উল্লেখ রয়েছে। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার রাঘব ভবনের পাশাপাশি বরানগরের ভগবতাচার্যের বাড়িতেও আসেন চৈতন্যদেব। সেই বাড়িই এখন বরানগর পাঠবাড়ি আশ্রম।
মহাপ্রভু যখন নীলাচল অর্থাৎ পুরীতে, তখন বাংলা থেকে তাঁর শিষ্য ও ভক্তরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। মূলত জগন্নাথদেবের রথযাত্রার আগে তাঁরা হেঁটে পৌঁছতেন পুরী। হরিনাম সঙ্কীর্তনে মুখরিত হতো পথঘাট। তাঁরা সঙ্গে নিয়ে যেতেন দময়ন্তীদেবীর রান্না করা নানা খাবার। সেই আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো। তখন থেকে এই সামগ্রীর বহর ‘রাঘবের ঝালা’ নামে পরিচত হয়। চাল, ডাল, নানাবিধ মশলা, কর্পুর, লবঙ্গ, বিভিন্ন ধানের খইয়ের মোয়া, চিঁড়ে, বাদাম, ক্ষীর, তিল ও শুটিখণ্ডের নাড়ু, আতপ চালের মুড়ির মোয়া, আম্র কাসুন্দি, লেবু ও তেঁতুল, আমসত্ত, আমলকি, আমসি ইত্যাদি ছাড়াও থাকত কচু, থোড়, মোচা, কাঁঠাল, আম, আনারস, আম সহ নানা শাকসব্জি। তিলক সেবার জন্য যেত গঙ্গাজল ও মাটি।
বুধবার বরানগর পাঠবাড়ি থেকে বাসে করে যাবতীয় সামগ্রী পাঠানো হয়েছে পুরীতে। কয়েক দশক আগে পর্যন্ত ট্রেনের কামরা ‘বুক’ করে পুরীতে পৌঁছে দেওয়া হতো মহাপ্রভুর পছন্দের খাদ্যসামগ্রী। এখন তা যায় বাসে। এবার শুধুমাত্র পানিহাটির রাঘব ভবন থেকে এভাবেই যাচ্ছে প্রায় দু’টন খাদ্যসামগ্রী।’