ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে পূর্ব মেদিনীপুরের ১৭ হাজার হেক্টর আমন জমি, মাথায় হাত চাষিদের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কৃষিদপ্তরের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী,ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে পূর্ব মেদিনীপুরে ১৭ হাজার হেক্টর আমন জমি জলমগ্ন। ফলে চাষে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে। ঝড়ের দাপটে অনেক জায়গায় ধানগাছ নুইয়ে পড়েছে। এছাড়াও ৩০০ হেক্টর ফুল, সব্জি এবং পান চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা কৃষিদপ্তরের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির এই প্রাথমিক রিপোর্ট জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
কালীপুজোর ঠিক আগে একটানা বর্ষণের পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটে ফুলচাষ ভীষণ ক্ষতির মুখে। পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটে চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, দোপাটি, অপরাজিতা প্রভৃতি ফুলচাষে ক্ষতির বহর বাড়ছে। বন্যার ধাক্কা কাটিয়ে অনেকেই বেশি দামে চারা কিনে ফুলগাছ লাগিয়েছিলেন। সেসব শুরুতেই নষ্ট হয়ে গেল।
এবার দুর্গাপুজোর সময়ে বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে এমনিতেই ফুলচাষে বিরাট ক্ষতি হয়েছে, যার ফলে ফুলের দাম ছিল আকাশছোঁয়া। এবার কালীপুজোর প্রাক্কালে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিতে ফুলচাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হল।
আমন চাষেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে। তমলুক শহরের অদূরে পিপুলবেড়িয়া-২, বিষ্ণুবাড়-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশিরভাগ রাস্তাঘাট জলের তলায়। তমলুক ব্লকে অনেক জায়গায় চাষের জমি জলমগ্ন। অনেক জায়গায় ঝোড়ো হাওয়ায় ধানগাছ মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছে। তার উপর জল জমে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা বেড়েছে। পটাশপুর-১ ব্লকের অমর্ষি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের শৌলাভেড়ি, বলভদ্রপুর, আগরপাড়া, শামখোলা, হাতিবাঁধ প্রভৃতি আমন গাছ মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছে।
নন্দীগ্রাম থেকে খেজুরি, এগরা, পটাশপুর, ভগবানপুর সহ সব জায়গায় জল জমে গিয়েছে। চণ্ডীপুরে অনেক জায়গায় মাছের ভেড়ি এবং পুকুর ভেসে গিয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট পুরোপুরি জলের তলায়। ধান ও মাছ দু’টোতেই ক্ষতির আশঙ্কা বেড়েছে। চণ্ডীপুরের প্রাক্তন বিধায়ক অমিয়কান্তি ভট্টাচার্য বলেন, প্রচুর পুকুর ও ভেড়ি ভেসে গিয়েছে। রাস্তাঘাটও জলমগ্ন। একটানা বৃষ্টিতে একেবারে নাজেহাল অবস্থা। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সব্জি খেত একেবারে জলের তলায়। নন্দীগ্রাম-১ ও ২ ব্লকের অনেক গ্রামীণ রাস্তা পুরোপুরি জলমগ্ন। ভগবানপুর-১ ব্লকেও দুর্ভোগের ছবিটা একইরকম।