বিয়ের ফাঁদে নিঃস্ব ইঞ্জিনিয়ার!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ঝকঝকে তরুণী। অপূর্ব সুন্দরী। ‘গ্ল্যামার ক্যুইন’ বলতে যা বোঝায় তাই! উপযুক্ত পাত্র খুঁজছেন তিনি। এমন স্বপ্নের নায়িকাকে জীবন সঙ্গীনি করতে কে না চান?
চেয়েছিলেন পাঁশকুড়ার এক ইঞ্জিনিয়ারও। সাইটের ছবি দেখেই তিনি ‘ফিদা’ হয়ে গিয়েছিলেন। তারপর ফোনালাপ-পরিচয়…প্রেম, রাত জেগে গল্পগুজব। শেষে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাব। আর সেটাই কাল হল ইঞ্জিনিয়ারের! হবু স্ত্রী’র নিখুঁত অভিনয় করে ৩৯ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় ওই সুবেশা তরুণী। সঞ্চিত অর্থ খুইয়ে একরকম নিঃস্ব ইঞ্জিনিয়ার। উবে গিয়েছে বিয়ের নেশাটাও। তরুণীর খোঁজে তমলুকের সাইবার ক্রাইম থানায় মামলা দায়ের করেছেন তিনি। শুরু হয়েছে তদন্ত-তল্লাশি।
ওই তরুণী আসলে রহস্যময়ী। অন্তত পুলিস এ ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত। কেননা, ম্যাট্রিমনি সাইটে দেওয়া ছবিটি ভুয়ো। সেটি বাংলাদেশের এক জনপ্রিয় নায়িকার। নিজের নাম শ্রেয়া মুখোপাধ্যায় ও কলকাতার বাসিন্দা বলে সাইটে উল্লেখ করেছিল। তা দেখেই বোকা বনে গিয়েছিলেন পাঁশকুড়ার বৃন্দাবনচক গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার। তাঁকেই হবু স্ত্রী ধরে নিয়ে টাকা দিতে দু’বার ভাবেননি। নানা বাহানায় মোট ১০৯ দফায় ৩৯ লক্ষ ১২ হাজার টাকা রহস্যময়ীর অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছেন বলে পুলিস সূত্রে খবর। তারপরও টাকা চাওয়ার বিরাম নেই। তখনই ইঞ্জিনিয়ারের সন্দেহ হয়। ২৫ ডিসেম্বর বিয়ের আশা ছেড়ে সটান চলে আসেন থানায়। দ্বারস্থ হন। দায়ের করেন প্রতারণার মামলা।
এর আগেও তমলুকের এক যুবক একইভাবে ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে প্রতারিত হয়েছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিস হলদিয়ার দুর্গাচক থানা এলাকা থেকে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। সেক্ষেত্রেও নায়িকার ছবি দিয়ে ফেক প্রোফাইল বানিয়ে ফাঁদ পাতা হয়েছিল। প্রায় ২২ লক্ষ টাকা খুইয়েছিলেন প্রতারিত যুবক। অভিযুক্ত এখন জামিনে। পাঁশকুড়ার ঘটনায় তদন্তকারী অফিসারদের ধারণা, একই ব্যক্তি ইঞ্জিনিয়ারকে ঠকিয়েছে। কারণ, এক্ষেত্রেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দুর্গাচক থানা এলাকার। ওই যুবককেই সন্দেহের তালিকা রাখা হয়েছে। বাংলাদেশি নায়িকার ছবি ব্যবহার করে নকল প্রোফাইল বানানো হয়েছিল। বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে ফোনে মেয়েদের কণ্ঠে কথাবার্তা বলে মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করা হয়েছিল।