পথ দুর্ঘটনা রোধে একাধিক পরিকল্পনা বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নানা রকম সতর্কবার্তা দেওয়ার পরও বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় রাশ টানা যাচ্ছে না। রবিবার বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এক দুর্ঘটনায় মা, বাবা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তারপর কিছুটা হলেও নড়েচড়ে বসেছে কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগ। ট্রাফিক থানায় অফিসার ও মহিলা কনস্টেবলের সংখ্যাবৃদ্ধি, রাস্তা তৈরি ও সংস্কারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা সহ একগুচ্ছ পরিকল্পনা হয়েছে। বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বার বা পানশালাগুলি যাতে নির্দিষ্ট সময়ে বন্ধ হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি থানাকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। গত বছরের তুলনায় দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাতে সমস্ত রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের।
গত ৩০ জানুয়ারি সমাজ মাধ্যমে বার্তা দিয়ে বারাকপুরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার অলক রাজোরিয়া জানিয়েছিলেন, ২০২৪ সালে কমিশনারেট এলাকায় ৪৫টি খুন ও অপরাধমূলক হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ১৬৬ জনের। অর্থাৎ খুনের চেয়ে প্রায় চারগুন বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল পথ দুর্ঘটনায়। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন মোট ৩৫০ জন। তাঁদের অনেকেই বিকলাঙ্গ হয়ে মৃত্যুর দিন গুনছেন। চিকিৎসা করাতে গিয়ে পথে বসেছেন বহু মানুষ। তাই দুর্ঘটনা নিয়ে মানুষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার কাজ চলছে শম্বুক গতিতে। কিছু জায়গায় রাস্তার অবস্থা বেশ খারাপ। ফলে দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। বহু জায়গায় আলো নেই। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিসের নজরদারিতেও ঘাটতি রয়েছে। আরও অভিযোগ, পুলিশ পথ নিরাপত্তা জোরদার করার চেয়ে ‘আয়’ বাড়াতেই বেশি ব্যস্ত। এই আবহে পথ নিরাপত্তা বাড়াতে কমিশনারেট বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রতিটি সাব ট্রাফিক গার্ডে অফিসার ও পুলিশকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম দফায় অন্তত ১৫ জন আধিকারিক ও মহিলা কনস্টেবল নিয়োগ করা হবে। সাব ট্রাফিক গার্ড তুলে দিয়ে প্রতিটি থানায় ট্রাফিক গার্ড করা হবে। প্রতিটি জায়গায় ট্রাফিক ইনসপেক্টর নিয়োগ হবে। এছাড়া, প্রতিটি বড় রাস্তার ধারে প্রচুর বার কাম রেস্তরাঁ তৈরি হয়েছে। মধ্যরাত পর্যন্ত সেখানে চলছে নাচগান, সুরাপান, হুল্লোড়। এগুলো সব নির্দিষ্ট সময়ে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত রাস্তার কাজ সম্পন্ন করতে পূর্তদপ্তরের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে পুলিশের।