প্রথা ও ঐতিহ্য মেনে বসন্ত উৎসব উদযাপন করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, বহিরাগতদের প্রবেশে ছিল নিষেধাজ্ঞা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার সূচনা লগ্ন থেকে বসন্ত উৎসব অন্যতম ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান। একটা সময় দোল পূর্ণিমার দিনে বসন্ত উৎসব আয়োজন করত কর্তৃপক্ষ। তবে, বছরের পর বছর যেভাবে ভিড় বাড়ছিল, তাতে ক্যাম্পাসের স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে কর্তৃপক্ষের। এর মাঝে বহিরাগতদের ঠেকাতে পরীক্ষামূলকভাবে ক্যাম্পাসের বাইরে মেলার মাঠে বসন্ত উৎসব আয়োজন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু প্রবল গরমে অনেক পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় পুনরায় অনুষ্ঠানটি ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনা হয়।
তবে, ২০১৯ সালের বসন্ত উৎসবে পর্যটকদের ভিড় জনসমুদ্রের চেহারা নেয়। কয়েক ঘন্টার জন্য বোলপুর শহর কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। ওই বছরই সর্বসাধারণের জন্য শেষবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানটি হয়েছিল। এরপর ২০২০ সালে করোনার কারণে প্রস্তুতি নিয়েও শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে যায় অনুষ্ঠান। তারপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বসন্ত উৎসব দোল পূর্ণিমার পরিবর্তে আগে বা পরে ঘরোয়াভাবেই আয়োজন করে আসছে। এ বছর তার অন্যথা হবে না, তা আগাম জানিয়ে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। সেই মতো প্রথা ও ঐতিহ্য মেনে মঙ্গলবার বসন্ত উৎসব উদযাপন করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
ভোরে বৈতালিক, সকাল সাতটায় ‘খোল দ্বার খোল…’ গানে সমবেত শোভাযাত্রা। তারপর শান্তিনিকেতনের পাঠভবন সংলগ্ন গৌরপ্রাঙ্গণে রবি ঠাকুরের বসন্তের গানে রবীন্দ্রনৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে শেষ হয় সকালের অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় ওই একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় রবীন্দ্র গীতিনাট্য ‘বাল্মীকিপ্রতিভা’। বিশ্ববিদ্যালয় আগেই জানিয়েছিল, এবারেও বসন্ত উৎসব ঘরোয়াভাবে আয়োজন করবে। তাই, বহিরাগত পর্যটক ও স্থানীয়দের এদিনের অনুষ্ঠানে প্রবেশাধিকার ছিল না। তা সত্ত্বেও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে প্রবেশের গেটগুলির সামনে নীল চাদর দিয়ে ঘিরে রেখেছিল বিশ্বভারতী। নিরাপত্তা জোরদার করতে সুবর্ণরেখা সংলগ্ন রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিস মোতায়েন করেছিল শান্তিনিকেতন থানা। দিনের শেষে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানগুলি সম্পন্ন হওয়ায় স্বস্তিতে বিশ্বভারতী ও পুলিস প্রশাসন ।