প্রধানমন্ত্রী বা রেলমন্ত্রী কেউই সময় দিচ্ছেন না, শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনের উদ্বোধন অনিশ্চিত
রাজনৈতিক নেতাদের সৌজন্যে হয়রানি আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে সাধারণ মানুষের। সৌজন্যে শিয়ালদহ মেট্রো। প্রায় মাস খানেক আগে ফুলবাগান থেকে শিয়ালদহ বর্ধিত রুটে মেট্রো চালানোর অনুমতি মিলেছে। কিন্তু যাত্রীদের জন্য এখনও খুলছে না শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন। কারণ? প্রধানমন্ত্রী নাকি রেলমন্ত্রী কার হাতে দেশের ব্যস্ততম রেল স্টেশনের পাশে নবনির্মিত মেট্রোর উদ্বোধন হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। যার জেরে হাজার হাজার যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। এ বিষয়ে কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপের লিখিত বার্তা দেখলেও তিনি কোনও জবাব দেননি। স্বভাবতই শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন কবে খুলবে, তা এখনও অনিশ্চিত। এ প্রসঙ্গে মেট্রোর এক কর্তা বলেন, নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর এই বর্ধিত রুটের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। গত বছর বিধানসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক ডিভিডেন্ড নিতে পিছ পা হয়নি কেন্দ্রীয় শাসকদল। সমস্ত কাজ শেষ হওয়ার প্রায় দু’মাস পর খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সশরীরে এসে এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। স্বভাবতই শিয়ালদহের জট খুলতে রাজনীতিবিদরা আরও কতদিন নেন, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)। ওই সংস্থার এক কর্তা বলেন, আমরা মেট্রো চালাতে পুরোপুরি তৈরি। কিন্তু দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রী উদ্বোধনে না আসায় শিয়ালদহ চালু করা যাচ্ছে না। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, রাজনীতির জাঁতাকলে পড়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পুরোপুরি ধুঁকছে। এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে পূর্ব নির্ধারিত রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে রেল। যার জেরে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে গিয়েছে বহুগুণ। পাশাপাশি নতুন রুটে মেট্রো সুড়ঙ্গ করতে গিয়ে ঘটে গিয়েছে বউবাজার বিপর্যয়। ওই কর্তা আরও বলেন, একাধিক জটে আবদ্ধ এই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রকল্প ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে এক দশকের কাছাকাছি কাজ চললেও, তা কবে সম্পূর্ণ হবে তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। দেশের বিভিন্ন উন্নত শহরের ক্ষেত্রে ইস্ট-ওয়েস্টের মতো সাড়ে ১৬ কিলোমিটার মেট্রো পথ চালু করতে গড়ে লাগে মাত্র পাঁচ বছর। কিন্তু ‘সিটি অব জয়’ এবং ‘টুইন সিটি’কে যুক্ত করা এই প্রকল্পের মন্থর গতির জেরে সার্বিক সমস্যায় ভুগছে আম জনতা।