নবান্ন অভিযানে পুলিশকে গুলি চালাতে বাধ্য করার ছক কষছে বিজেপি?
মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান। তার আগে শুক্রবারেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলেছে গেরুয়া শিবির। ঠিক হয়েছে তিনটি মিছিল তিন দিক দিয়ে নবান্নের দিকে এগোবে। কতটা এগোনো যাবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করেছেন, প্রতিটি মিছিলকেই পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে নবান্ন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, ঘরোয়া কোন্দলে লাটে উঠেছে সংগঠন। দিশাহারা নেতা-কর্মীরা। তাই উৎসব মরশুমের প্রাক্কালে বঙ্গে ‘অক্সিজেন’ জোগাতে বিজেপির নতুন ‘প্ল্যান’— নবান্ন অভিযান (Nabanna Abhijan)।
চূড়ান্ত যে পরিকল্পনা তাতে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা কর্মী-সমর্থকরা শিয়ালদহ বা কলকাতা স্টেশনে নেমে চলে আসবেন কলেজ স্ট্রিটে। মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও দুই ২৪ পরগনার কর্মীদের সেখানে আসবেন। সেখান থেকে মিছিল হবে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে। অন্য দিকে, হাওড়া স্টেশনে পৌঁছানো কর্মীরা চলে যাবেন হাওড়া ময়দানে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান, হুগলির কর্মীদের জমায়েত হবে সেখানে। ওই মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তৃতীয় মিছিলটি শুরু হবে সাঁতরাগাছি বাস স্ট্যান্ড থেকে। নেতৃত্বে থাকবেন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। দুই মেদিনীপুর-সহ দক্ষিণবঙ্গে যে কর্মীরা সড়কপথে আসবেন তাঁদের জমায়েত হবে সাঁতরাগাছিতে।
আগামী মঙ্গলবার সেই কর্মসূচির আড়ালেই কলকাতা এবং হাওড়ায় বড়সড় হাঙ্গামার ছক কষেছে গেরুয়া শিবির। রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দপ্তরে এমনই রিপোর্ট জমা দিয়েছেন গোয়েন্দারা। তাতে বলা হয়েছে, মূলত মহিলাদের ঢাল বানিয়ে প্ররোচনা দেওয়া হবে পুলিস ও নিরাপত্তা কর্মীদের। ‘রক্তপাতে’র লক্ষ্যে সাজানো হয়েছে পরিকল্পনা। মূলত দলবদলু এক বিজেপি নেতা ও তাঁর শাগরেদরা এর কলকাঠি নাড়ছেন বলে জানাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
তবে সূত্রের খবর, রাজনৈতিক অভিযানে কোনও হিংসা চাইছে না বঙ্গ বিজেপির (BJP) একটা অংশ। কিন্তু ওই দলবদলু নেতা ও তাঁর শাগরেদরা হাঙ্গামা-হুজ্জুতি করেই দলকে সংগঠিত করার পক্ষে। দলের এই অংশই মূলত গোলমাল পাকানোর ছক সাজিয়েছে। এদের অভিসন্ধি, নানাভাবে প্ররোচিত করে পুলিসকে গুলি চালাতে বাধ্য করা। আর তাতে কেউ হতাহত হলে, বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আরও বড়সড় হাঙ্গামা বাধানো হবে। তার ব্লু-প্রিন্টও তৈরি। গোয়েন্দাদের তরফে এই ছকের বিষয়টি সামনে আসামাত্র আরও সাবধানী কলকাতা ও রাজ্য পুলিস। বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে হাওড়া কমিশনারেট এবং জেলা পুলিসকে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, নবান্ন পর্যন্ত এগতে না পারলে, আশপাশের এলাকায় হাঙ্গামা বাধানোর মরিয়া চেষ্টা চালাবে অভিযানে অংশগ্রহণকারীরা।