দেশ বিভাগে ফিরে যান

অনলাইনে ওষুধ বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল

February 11, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ই-ফার্মেসি বা অনলাইনে ওষুধ বিক্রি নিষিদ্ধ নাকি বৈধ, এই বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে টানবাহনা চলছিল। ই-ফার্মেসি মানে হল, যেখানে ক্রেতা ওষুধ অনলাইনে অর্ডার করেন এবং তার টাকা অনলাইনে বা ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’তে দেন। ওষুধ তাঁর বাড়ি পৌঁছে যায়। অর্থাৎ, সেখানে কোনও ওষুধের দোকানের অস্তিত্ব থাকে না। এবার দেশজুড়ে এই অনলাইন ফার্মাসি বন্ধ করতে কড়া নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল। আদালতের নির্দেশে উল্লেখ করে তারা জানিয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে ওষুধ বিক্রি এখন সম্পূর্ণ বেআইনি।

দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এই রায় দিয়েছিলেন। পরবর্তী রায় না দেওয়া পর্যন্ত বিক্রি বন্ধ রাখারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তাই এই নির্দেশ যেন লাগু করা হয়। শুধু তাই নয়, বিষয়টিকে যে কেন্দ্র নেহাত আর একটি সরকারি নির্দেশের মতো দেখছে না, তা বোঝাতে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের অন্যতম ২৪টি বড় কর্পোরেটের ই-ফার্মেসিকে শো-কজ করেছে তারা। লাইসেন্স ছাড়া অনলাইনে ওষুধ বেচায় কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই উত্তর তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন খোদ ড্রাগস কন্ট্রোল জেনারেল, ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) ডাঃ ভি জি সোমানি।

বিনা লাইসেন্সের অনলাইনের দোকানগুলির মাধ্যমে সহজেই ঘুমের ওষুধ ও নারকোটিক ড্রাগ যুবসমাজের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। বারবার এই যুক্তিও দিয়ে আসছিল দোকানদারদের সর্বভারতীয় সংগঠন এআইওসিডি। লড়াই আদালতেও পৌঁছয়। তারপর দিল্লি হাইকোর্ট কড়া নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্দেশ থেকে গিয়েছিল কাগজেকলমেই। বাস্তবায়িত করতে বারবার কেন্দ্রকে চাপ দেওয়ায় কাজ হচ্ছে না দেখে এআইওসিডি কর্তারা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে ‘হাল্লা বোল’-এর ডাক দেন। ওয়াকিবহল মহলের মতে, ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতি এবং দেশজুড়ে ওষুধের দোকান বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। বুধবারই দোকানদারদের সংগঠনের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য, ডিসিজিআই ডাঃ সোমানিরা।

দেশে বর্তমানে বড় কর্পোরেট পরিচালিত ই-ফার্মাসির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। মোট বাজার কমপক্ষে ৩ হাজার কোটি টাকার। যদিও অর্থনৈতিক পণ্ডিতরা ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন, যেভাবে ‌ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে, প্রতি বছর কমপক্ষে ২০-২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এই বাজার। চালুর পর থেকে চাঞ্চল্যকর ছাড়ে (১৫, ২০, ২২, ২৫ এমনকী ৩০ শতাংশ) ওষুধ বেচে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে ই-ফার্মাসিগুলি। সেখানে খুচরো দোকানদারদের কাছে মাসকাবারি ওষুধ কিনলে বড়জোর ১০, ১৫, ১৮, বড়জোর ২০ শতাংশ ছাড় মেলে। দেশজুড়ে খুচরো, পাইকারি মিলিয়ে ওষুধ ব্যবসায় ১০ লক্ষ দোকানদার ও দেড় কোটি মানুষের রুজিরুটি জড়িয়ে রয়েছে।

উল্লেখ্য, অনলাইনে অনিয়ন্ত্রিত বিক্রির ফলে ওষুধের অপব্যবহার বাড়তে পারে, এমন অভিযোগ তুলে ২০১৭ সালে দিল্লি হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেন কিছু চিকিৎসক। তারই প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের ১২ তারিখ দিল্লি হাইকোর্ট অনলাইন ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর পর অন্য এক আবেদনের ভিত্তিতে মাদ্রাজ হাইকোর্টও জানায়, যতদিন না কেন্দ্র অনলাইনে ওষুধ বিক্রির ব্যাপারে কোনও আইন করছে ততদিন কোনও ই-ফার্মাসি চেন্নাইতে ওষুধ বেচতে পারবে না। ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেও বলে আদালত। কিন্তু সে ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করতে এখনও দেখা যায়নি। অবশেষে দিল্লি হাই কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বড় পদক্ষেক করল কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#modi govt, #Online pharmacy

আরো দেখুন