টালা ব্রিজের নকশা অনুমোদন করল রেল কর্তৃপক্ষ
১৮ মাসের মধ্যে নতুন টালা ব্রিজ তৈরি করে শহরবাসীকে উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণে দ্রুত এগচ্ছে রাজ্য সরকার। নির্মাণ কাজের জন্য ইতিমধ্যেই নকশা অনুমোদন করেছে রেল মন্ত্রক। স্বভাবতই আরও দ্রুতগতিতে ব্রিজ তৈরির কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছে পূর্তদপ্তর। বিভাগীয় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের (Arup Biswas) নেতৃত্বে গোটা কর্মকাণ্ড সময়ের আগে শেষ করার লক্ষ্যে ধারাবাহিক নজরদারি চালাচ্ছে নবান্ন।
উল্লেখ্য, বয়সের ভারে ন্যুব্জ টালা ব্রিজ (Tala Bridge) ভেঙে নতুন করে তা গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে পূর্তদপ্তর। ব্রিজের নীচের বিস্তৃত অংশে রয়েছে চিৎপুর রেল ইয়ার্ড এবং চক্ররেলের লাইন। স্বভাবতই প্রস্তাবিত এই অংশে নির্মাণ কাজের জন্য রেলের অনুমোদন জরুরি ছিল। সেই সূত্রে গত ১৪ ডিসেম্বর পূর্তদপ্তর নির্মাণ কাজের নকশা রেলকে পাঠিয়েছিল। গত মঙ্গলবার পূর্ব রেল রাজ্য সরকারের সেই নকশা অনুমোদন করেছে। এই ছাড়পত্র মেলায় নতুন টালা ব্রিজ তৈরিতে বাড়তি গতি পেল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্রিজ নির্মাণের সময়সীমা স্থির করে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষকে পরিষেবা পৌঁছে দিতে আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। দেশের সেরা ব্রিজ নির্মাণকারী সংস্থা এখানে কাজ করছে। অরূপবাবু আরও বলেন, রেলের তরফে নির্মাণকাজ শুরুর প্রাথমিক ছাড়পত্র আমরা পেয়েছি। আগামীদিনে আরও একাধিক বিষয়ে পূর্ব রেলের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কে ডি দাস বলেন, প্রস্তাবিত নতুন টালা ব্রিজ তৈরির জন্য আমরা রাজ্য সরকারকে অনুমোদন দিয়েছি।
পূর্তদপ্তর চাইলেই রেলের অংশে নির্মাণকাজ শুরু করে দিতে পারে। উল্লেখ্য, মাঝেরহাট ব্রিজ নিয়ে সম্প্রতি রেল-রাজ্য তরজায় জড়িয়েছিল। রাজ্য সরকারের অভিযোগ ছিল, মাঝেরহাট ব্রিজ চালুর চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে অহেতুক দেরি করছে রেল। শুধু তাই নয়, মাঝেরহাট ব্রিজ উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কাজের জন্য রেলকে দেওয়া ৩৪ কোটি টাকা ফেরতের দাবি তুলেছিলেন। যার প্রেক্ষিতে পূর্ব রেলের বক্তব্য ছিল, সুনির্দিষ্ট বিধি মেনে এই টাকা নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়ম বহির্ভূত কাজের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছিল রেল।
সেই তিক্ততার স্মৃতি এড়াতেই কী এবার তড়িঘড়ি নকশা অনুমোদন করল রেল, তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে প্রশাসনিক মহলে। সূত্রের দাবি, টালা ব্রিজের নীচে রেলের অংশে ছ’টি কংক্রিটের স্তম্ভ গড়তে হবে। রেলের জমিতে তা নির্মাণের জন্য ছাড়পত্র চাওয়া হয়েছিল। সেই সূত্রেই গত ১৪ ডিসেম্বর পূর্তদপ্তর প্রস্তাবিত নকশা রেলকে পাঠায়। সেখানে সেতুর কাঠামো, ভিতের নকশা সহ যাবতীয় বিবরণ দেওয়া হয়। যেখানে রেলের অংশে রোড ওভারব্রিজ নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা সারেন রাজ্য ও রেলের কর্তারা। এরপর পূর্ব রেলের স্থপতি বিশেষজ্ঞরা এলাকা পরিদর্শন ও আলোচনা করে পূর্তদপ্তরের প্রস্তাবিত নকশা অনুমোদন করে। পাশাপাশি আগামীদিনে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতীয় রেলের তরফে সব রকম সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।