উৎসব যার যার পিঠে সবার
একে শীতকাল তার ওপর ঘরে নারকোল, নতুন গুড়। আবার সংক্রান্তি। নানা রকমের পিঠে-পুলি খাওয়ার সময় তো এখনই। বছরের এই বিশেষ দিনে পিঠে খাওয়া বাঁধা। নিজে বানাতে না পারলে কেনাই চলবে। গুড় আর দুধ সহ্য হয় না? তারও উপায় আছে। শুধু থাকতে হবে পিঠে-পুলি খাওয়ার ইচ্ছে।
পাটিসাপটা, চিতই পিঠে, আসকে পিঠে, তেলের পিঠে, কাঁকন পিঠে, গোকুল পিঠে, ভাপা পিঠে, নোনতা পিঠে- তালিকা অসীম। এখন আবার ভোজন রসিকদের জন্য আছে বেকড পাটিসাপ্টা, সয়া আমন্ড পাটিসাপটা, ওটস পাটিসাপটা আরও কত কী। শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে এখন পিঠের জন্য আলাদা কাউন্টার। পিঠের মেলাও শুরু হয়েছে নানা পাড়ায়।
আগে চাল গুঁড়ো করে তবে পিঠে হত। এখন তো গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়ো কিনতেই পাওয়া যায়। আর তার জন্যই সহজ হয়ে গিয়েছে পিঠে বানানোও। দোসা, ইডলির মতো বছরের এই বিশেষ সময়ে কিছু ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পেয়ে যাবেন পাটিসাপটার মিক্সও। নারকোল কোরানোরও ঝক্কি নেই আর। কোরানো নারকোলও পাওয়া যায় বাজারে। ঘণ্টার পর ঘন্টা নেড়ে গুড় নারকেলের ছেই বানানো? তারও দরকার ফুরিয়েছে। মাইক্রোওয়েভ ওভেনে দিন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখবেন দুটো মিলেমিশে গিয়েছে।
শুধু এ বাংলা নয়, বাংলাদেশেও কিন্তু এই শীতের সময় পাওয়া যায় নানা ধরনের পিঠে। পিঠে এখানে অনেকটা স্ট্রিট ফুডের মতো বিক্রী হয় শীতকালে। এখন আবার শীতের নানা সব্জি দিয়ে নোনতা পিঠের চলও শুরু হয়েছে। একটি রেস্তোঁরা খুলে গেছে শহরে যেখানে মাছ বা মাংসের পুর দিয়ে তৈরি হয় পিঠে। অনেকে আবার চিতই পিঠের সঙ্গে শুটকি ভর্তা বা আলু ভর্তা খান।
কারও যদি নারকোল, দুধ, ক্ষীর সবেতেই আ্যালার্জি থাকে? তিনি কি পিঠে পাবেন না? একদম না। সয়া-আমন্ড পাটিসাপটা খেতে পারেন তারা।ঘি বা সাদা তেলে ভাজা পিঠে এখন অনেকেই খেতে চান না। তাই বেকড পিঠেও কিন্ত স্বাস্থ্যকর বিকল্প ।
বছরের এই একটি দিন। যেখানে নারকোল, গুড়, চালের গুঁড়ো, ক্ষীর হয়ে ওঠে ভালোবাসা প্রকাশের ভাব। যখন মন ছুটে চলে যায় ঠাকুমা-দিদিমার হেঁসেলে। যখন আপনিও চান সীমিত ক্ষমতার মধ্যেই পিঠ-পুলি করে খাওয়াতে আপনার সন্তানকে। ঠিক যেমন যত্র করে আপনার মা আপনাকে খাইয়েছেন।