বিনোদন বিভাগে ফিরে যান

‘উনিশে এপ্রিল’: ঋতুপর্ণর প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি

April 19, 2020 | 2 min read

সালটা ১৯৯২। হিরের আংটি বানালেন। কিন্তু ছবিটি মুক্তি পায়নি। সেই বছরই দিল্লির দূরদর্শন অফিসও কুরুচিকর নোট দিয়ে উনিশে এপ্রিলের স্ক্রিপটি ফেরত পাঠায়। পরবর্তী কালে অপর্ণা সেন এই ফিল্ম ফাইনান্স করেন এবং তাতে অভিনয়ও করেন। এর পরের গল্প তো সকলের জানা। খুব অল্প দিনের মধ্যেই ঝাঁকড়া চুলের ছেলেটি ইন্ড্রাস্টিকে উপহার দিল একের পর এক অন্য ধারার সিনেমা। বাড়ল জাতীয় পুরস্কারের তালিকা। 

ঋতুপর্ণ মানে সম্পর্কের নতুন সমীকরণ। চেনা ছকের বাইরে সাধারণ সম্পর্ককে একটু অন্যরকম করে দেখা, গল্প বলার চেষ্টা- এতেই আকৃষ্ট হলেন দর্শক। অন্দরমহলে আটকে থাকা নারী, নারী মনের ইচ্ছে, চাওয়া পাওয়া ভীষণ ভাবে উপলব্ধি করতেন তিনি। তাইতো ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্নার’ মতো সিনেমাকে ছাপিয়ে যায় ‘উনিশে এপ্রিল’।

ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী সরোজিনী গুপ্ত (অপর্ণা সেন) এবং তার স্বাধীনচেতা কন্যা অদিতি সেন (দেবাশ্রী রায়) এর সম্পর্কের জটিল সমীকরণ নিয়েই গল্পটি লেখা। ছবিটি শুরু একদম সকালে একদম সারাদিন মা ও মেয়ের দিনপঞ্জি  তুলে ধরে। দিল্লিতে ডাক্তারি পড়ে অদিতি। সে কলকাতায় মায়ের কাছে থাকতে এসেছে। 

১৯ এপ্রিল বাবার মৃত্যুবার্ষিকী এবং এই দিনই সরোজিনী এক বিশেষ সম্মান জিতলেন। মিডিয়ার অবিরাম ফোন ও নানাকাজের মাঝে তিনি ভুলেই গেছিলেন স্বামীর মৃত্যুবার্ষিকীর কথা। অদিতি হতাশ হয়ে যায় মায়ের ব্যবহারে। অদিতি তার ব্রেকিং পয়েন্টে পৌঁছায় যখন তার প্রেমিক ফোনে জানায় যে সে অদিতিকে বিয়ে করতে পারবে না, কারণ ওর মা একজন নৃত্যশিল্পী।

ঋতুপর্ণ মানে সম্পর্কের নতুন সমীকরণ।

এই রকম একটি গল্পে সহজেই একঘেয়েমি আসতে পারে যদি না গল্প বলার ধরণে নতুনত্ব থাকে। ঋতুপর্ণ ঘোষ দক্ষতার সাথে সেগুলি এড়িয়ে যান। ওনার লেখা চিত্রনাট্য এবং সুনির্মল মজুমদারের চিত্রগ্রহণ কৃতিত্বের দাবি রাখে। গুপ্ত বাড়ির অন্দরমহলের শটগুলি চমৎকার। কিন্তু, উনিশ এপ্রিল সিনেমাটি পুরোটাই দাঁড়িয়ে অপর্ণা সেন এবং দেবশ্রী রায়ের দুর্দান্ত অভিনয়ের ওপর। বাণিজ্যিক ছবির গ্ল্যামার দূরে সরিয়ে দুজনেই যে সাবলীল অভিনয় করেছেন, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

উনিশ এপ্রিলে আরেক পাত্রের খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে – টেলিফোন। যখনই মা ও মেয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কোনও কথা হয়, টেলিফোন বেজে উঠে তাদের বাধা দেয়। যদিও সিনেমায় এরকম রূপক অনেক দেখা যায়, ঋতুপর্ণ ঘোষ মৌলিকতার ছাপ রেখেছেন। পরিচালকের বার্তা স্পষ্ট: লোকেরা যখন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তখন যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হল মন। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#rituparno ghosh, #film director, #Entertainment

আরো দেখুন