রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

২ করোনা হাসপাতালে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসাতে চলেছে রাজ্য সরকার

August 9, 2020 | 2 min read

করোনা চিকিৎসার প্রধান অস্ত্র অক্সিজেন থেরাপি। তাই চাহিদা তুঙ্গে। যেভাবে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে ভবিষ্যতে যে কোনও সময় সঙ্কট দেখা দিতে পারে। সেই সমস্যা মোকাবিলায় এবার আগাম পদক্ষেপ নিল রাজ্য। কলকাতার দু’টি প্রধান কোভিড হাসপাতালে লিক্যুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, বেলেঘাটা আইডি এবং এমআর বাঙুর হাসপাতালে প্ল্যান্ট গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। আগামীদিনে রাজ্যের অন্য কোভিড হাসপাতালগুলিতেও এই পরিকাঠামো নির্মাণ করা হবে। খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন এমআর বাঙুর হাসপাতালের সুপার শিশির নস্কর।

তবে অক্সিজেন নয়, দেশজুড়ে মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সিলিন্ডার। ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে যেভাবে মাস্ক-স্যানিটাইজারের অভাব দেখা যাচ্ছিল, এখন সেই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে মেডিক্যাল অক্সিজেন সিলিন্ডারের ক্ষেত্রেও। সাধারণ মানুষ তো বটেই, অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও ঘুরপথে অক্সিজেন মজুত করতে চাইছেন। পাশাপাশি, চিকিৎসায় ব্যবহৃত, গুদামজাত, সরবরাহের মাঝপথে থাকা সিলিন্ডারগুলি আটকে থাকায় সঙ্কট আরও বাড়ছে।

কেন্দ্রের পক্ষ থেকে গত এপ্রিল মাসে লকডাউনের মধ্যেই ১ লক্ষ ২ হাজার ৪০০ সিলিন্ডার সরবরাহ করার কথা জানানো হয়েছিল। চাহিদা বেশি থাকায় বাণিজ্যিক অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন, আর্গন ও হিলিয়ামের মতো বিষাক্ত বা দাহ্য নয় এমন গ্যাস সিলিন্ডারগুলিকে রূপান্তরের নির্দেশিকা জারি করেছিল মোদি সরকার। ৩ লক্ষেরও বেশি এমন বাণিজ্যিক অক্সিজেন সিলিন্ডার চিহ্নিতও করা হয়। সেগুলিকে মেডিক্যাল অক্সিজেন সিলিন্ডারে রূপান্তরের নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতেও বলা হয়েছিল উৎপাদক সংস্থাগুলিকে। সেই মতো কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকারও। সংস্থাগুলির কাছে তাদের গুদামে মজুত বাণিজ্যিক অক্সিজেন সিলিন্ডারের হিসেব জানতে চাওয়া হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, এর ফলে বিপদের সময় দ্রুত অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি লিক্যুইড অক্সিজেন প্ল্যান্টের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন থেরাপির পরিকাঠামো মূলত দ্বিমুখী। এক, কন্টেনারে করে অক্সিজেন আসে। তা সেন্ট্রাল অক্সিজেন পাইপলাইনের মাধ্যমে ভালভের সাহায্যে সরবরাহ করা হয়। কলকাতার সরকারি হাসপাতালে এই পরিষেবা রয়েছে। সম্প্রতি কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে কলকাতা মেডিক্যাল, এনআরএস এবং এমআর বাঙুর হাসপাতালে সেই পাইপলাইনের ম্যানিফোল্ড বাড়ানো হয়েছে। মুর্শিদাবাদেও মাতৃসদনে পাইপলাইন বসানোর কাজ হচ্ছে। দুই, অক্সিজেন সিলিন্ডারের মাধ্যমে চিরাচরিত প্রথায়। পাইপলাইন না থাকায় সিলিন্ডার ফুরনোর আশঙ্কা থাকছেই।

করোনা সংক্রমণের অন্যতম উপসর্গ শ্বাসকষ্ট। সেই কারণেই অক্সিজেনের জোগান স্বাভাবিক রাখাটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ হাসপাতালগুলির কাছে। এরাজ্যে করোনা রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশই স্বাভাবিক উপায়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তাঁদের সামান্য অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতাল এই থেরাপিতে প্রতি ঘণ্টায় কমবেশি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে এই ধরনের রোগীদের প্রতি মিনিটে ৪ থেকে ৪০ লিটার বা তারও বেশিমাত্রায় অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। সেক্ষেত্রে একটি সিলিন্ডারে ২৪ ঘণ্টাও যাচ্ছে না। তাই সিলিন্ডারে চাহিদা থাকছেই। বাতাসে থাকা অক্সিজেনকে চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করার বিষয়ে সুপারিশ করেছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেজন্য অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটরের পরিকাঠামো গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#corona hospitals, #State Government

আরো দেখুন