রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

নারী দিবসের প্রাক্কালে দুই মহিলা নেত্রীর দ্বৈরথ, বিজেপির অন্দরে নতুন চোরাস্রোত

March 7, 2022 | 2 min read

আগামী কাল, মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস। তার ঠিক আগে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ দুই মহিলা নেত্রীর মধ্যে সংঘাত চরমে। আর তাকে কেন্দ্র করে গেরুয়া পার্টির বাংলা ইউনিটের ফাটল আরও চওড়া হচ্ছে। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং অগ্নিমিত্রা পল। নতুন রাজ্য কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকেই পদ্ম শিবিরের এই জোড়া ‘সেলিব্রিটি’র ঠান্ডা লড়াই শিরোনামে। রাজ্য পার্টি এই মুহূর্তে ‘আদি’ এবং ‘নব্য’—দুইভাগে দ্বিখণ্ডিত। লকেট রয়েছেন মূলত পুরনো নেতাদের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে। অন্যদিকে, সুকান্ত-অমিতাভ গোষ্ঠী ‘কাছের’ নেত্রী অগ্নিমিত্রা। 


শনিবার ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে আয়োজিত সাংগঠনিক বৈঠকে বিজেপির দুই ‘নারী শক্তি’র পারস্পরিক বিভেদ আরও প্রকট হয়েছে। ওই বৈঠকে দিলীপ ঘোষ-রাহুল সিনহাদের সঙ্গে মঞ্চে বসার সুযোগ পেয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা। লকেট জায়গা পেয়েছিলেন সাধারণ দর্শক আসনে। যদিও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা বা জনপ্রতিনিধিত্বের মাপকাঠি, দুই ক্ষেত্রেই তাঁর দলের ‘নব্য নেত্রী’র তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন লকেট। কারণ, দ্বিতীয় দফায় তিনি রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক এবং লোকসভার সদস্য। ২০১৭ থেকে ২০২০—এই তিন বছর বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ছিলেন হুগলির এমপি। অন্যদিকে, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে বিজেপিতে যোগ দেন অগ্নিমিত্রা। তারপর উল্কার গতিতে উত্থান এই প্রাক্তন ফ্যাশন ডিজাইনারের। পরের বছরই লকেটের জায়গায় মহিলা মোর্চার সভানেত্রীর দায়িত্ব পান অগ্নিমিত্রা। তারপর বিধানসভার টিকিট। আসানসোল (দক্ষিণ) কেন্দ্র থেকে জিতে এসেই নয়া রাজ্য কমিটির অতি গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সম্পাদকের পদে বসেছেন। দলেরই একটা বড় অংশের দাবি, বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী জেনেবুঝেই লকেটকে অপমান করছেন। কারণ, পুরভোটে বিপর্যয়ের ময়নাতদন্ত দাবি ও নেতৃত্বের সমালোচনা করে আগেই সুকান্তদের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি। সেই সূত্রে ‘লবি’র নেত্রী অগ্নিমিত্রাকে বাড়তি ‘স্টেটাস’ পাইয়ে দিয়ে ‘বিদ্রোহী’ লকেটকে শিক্ষা দিতেই এই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায় রবিবার ফোনে বলেন, ‘এটা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। আমি পার্টির বিস্তার ও সমৃদ্ধি চাই’। অন্যদিকে, অগ্নিমিত্রার কথায়, ‘আমি শনিবার বৈঠক সঞ্চালনার দায়িত্ব পেয়েছিলাম। দুপুর ২টো থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা দাঁড়িয়ে এই কাজ করা যায় না। তাই মঞ্চে বসার সুযোগ পাই। লকেট ছাড়াও একাধিক এমপি এবং সমস্ত সাধারণ সম্পাদক ওইদিন দর্শক আসনে ছিলেন। আমাদের পার্টিরই কিছু মোটা মাথার নেতা দলের ক্ষতি করতে এইসব অযৌক্তিক বিতর্ক তৈরি করছেন। লকেটের সঙ্গে আমার দু’দশকের বেশি সুসম্পর্ক। সমস্যার প্রশ্নই ওঠে না। ওইদিনের বৈঠকে কাউকে অপমান করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।’ যদিও দলের আদি নেতাদের দাবি, রাজ্য বিজেপিতে আগে কখনও দু’জন মহিলা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন না। বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামোয় জায়গা দেওয়া হয়েছে দুই তারকা ‘নারী শক্তি’কে। ফল? চওড়া হচ্ছে ফাটল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #Locket Chatterjee, #Agnimitra Paul

আরো দেখুন