রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

অ্যান্টিবায়োটিককে ডাল-ভাত বানিয়ে বিপদে বাঙালি, তথ্য রাজ্যের সমীক্ষায়

January 27, 2023 | 2 min read

অ্যান্টিবায়োটিককে ডাল-ভাত বানিয়ে ফেলেছে আম বাঙালি। প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে, দেদার খাওয়া ফল ভুগতে শুরু করেছে বাঙালিরা। জ্বর হোক, বা সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, পেট খারাপসহ সব রোগে মুড়ি-মুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কুফল আস্তে আস্তে সামনে আসছে। কুফল নয়, একেবারে মারাত্মক ফল। সাড়ে ছ’হাজারের বেশি রোগীর মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে উঠে এল চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। বাংলায় ব্যবহৃত ৫০ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিকই আর রোগীর শরীরে কাজ করছে না। সাফ কথায়, রেজিস্ট্যান্ট হয়ে গিয়েছে। কোনও কোনও অ্যান্টিবায়োটিক নির্ধারিত অসুখে কাজই দিচ্ছে না।

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সরকারি হাসপাতালের আউটডোরের ৯২ শতাংশ রোগীদের ক্ষেত্রেই আর অ্যাজিথ্রোমাইসিন কাজ করছে না। ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে কাজ করছে না সেফিক্সিম। ওফ্লক্সাসিনের মতো অ্যান্টিবায়োটিক, বা অ্যান্টিবায়োটিক দুনিয়ার সুপার স্টার, অ্যামক্সিসিলিন-ক্লাভুলেনিক অ্যাসিড কাজেই আসছে না। ইমিপেনেম ও মেরোপেনেমের মতো জীবনদায়ী অ্যান্টিবায়োটিকও রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারছে না। ভ্যাঙ্কোমাইসিনের মতো কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিককেও হেলায় হারিয়ে দিচ্ছে ব্যাকটেরিয়াগুলি।
   
বাংলায় চালু হয়েছিল মাইক্রোবিয়াল আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স ডিটেকশন সিস্টেম অর্থাৎ হাসপাতালগুলিতে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকগুলি কতটা কার্যকর? কোনগুলি রোগ সারাতে কাজ করছে না? যেগুলো রোগ মুক্তি ঘটাতে পারছে, সেগুলিও কতটা কাজ করছে? কতটা কাজ করছে না? পুরনো অ্যান্টিবায়োটিকগুলির অবস্থা কেমন? মরণাপন্ন রোগীদের বাঁচাতে নতুন কোন অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যেতে পারে? এই সব উত্তর খুঁজতেই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য। গত অক্টোবর মাস থেকে ২৩টি মেডিক্যাল কলেজের আউটডোর, ‌ওয়ার্ড, আইসিইউ ও ভেন্টিলেশনের রোগীদের বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। ৬,৫৩৬টি নমুনার রিপোর্ট জমা পড়ে স্বাস্থ্যভবনে। সেখানেই সামনে এসেছে এই ভয়ঙ্কর ফলাফল।
 
জানা গিয়েছে, বাংলার হাসপাতালগুলিতে মূলত পাঁচটি ব্যাকটেরিয়াঘটিত রোগের রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক। সেগুলি হল, ই কোলাই, ক্লেবসিয়েলা, স্টেফাইলোকক্কাস, অ্যাসিনেটোব্যাকটর ও সিউডোমোনাস। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিক কাজ না করলে নিরাময় কী করে হবে? তবে সমীক্ষায় আশার আলোও দেখা গিয়েছে। কম ব্যবহার হওয়ায় কারণে আশ্চর্যজনকভাবে কঠিন রোগভোগে ফের কাজে দিতে শুরু করেছে ডক্সিসাইক্লিন, জেন্টামাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন প্রভৃতির মতো পুরনো অ্যান্টিবায়োটিক। এক কথায় আর যথেচ্ছ নয়! যেকোনও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে সাবধানে ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে। জানা গিয়েছে, অবিলম্বে ওষুধের দোকান থেকে বিনা প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক কেনা বন্ধ করতে ও যত্রতত্র একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগ রুখতে পদক্ষেপ করবে রাজ্য।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #report, #Swasthya Bhaban, #anti biotics, #demerits

আরো দেখুন