করোনা আবহে থানায় ডাক্তারদের নাম, ফোন নম্বর রাখার উদ্যোগ নবান্নের
টেলিমেডিসিন রয়েছে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকারও। কিন্তু সময়ে চিকিৎসক না মেলার আতঙ্ক এখনও কাটেনি। রাজ্যে বহু আক্রান্ত বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে প্রাথমিক চিকিৎসা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ডাক্তার ডেকেও পাচ্ছেন না রোগীর পরিবার পরিজনেরা। ডাক্তারের অভাবে ঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌঁছনো যাচ্ছে না। এমনকী, কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছেন করোনা রোগী। ভুগছেন সাধারণ মানুষও। এই সমস্যা মেটাতে এবার একটি বিশেষ উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। এখন থেকে প্রতিটি থানায় স্থানীয় দু’-তিনজন ডাক্তারের নাম এবং মোবাইল নাম্বার নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। সেই থানা এলাকায় কোনও রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রয়োজন হলে মেটাবেন ওই চিকিৎসকরাই। আপাতত এই অভিনব পদ্ধতি শুরু করা হবে কলকাতা পুলিসের অধীনে থাকা থানাগুলিতে। ধীরে ধীরে সংক্রমণের প্রকোপ বেশি থাকা হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা সহ কলকাতার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতেও এই ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠকে শহরের আবাসনগুলিতে থাকা নিঃসঙ্গ প্রবীণ নাগরিকদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমীক্ষা চালিয়ে তাঁদের যাবতীয় তথ্য নথিভক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভা ও পুলিসকে। পাশাপাশি, ডাক্তার না মেলার বিষয়েও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে নবান্নে। দু’টি সমস্যার সমাধানে সম্প্রতি বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম, নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন, কলকাতার পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মা সহ শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরা। সেখানেই এই বিষয়ে সহযোগিতার অনুরোধ করা হয় চিকিৎসকদের সংগঠনগুলিকে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবারই থানা প্রতি দু’ থেকে তিনজন ডাক্তারের নাম ও মোবাইল নম্বর পুলিস কমিশনারের কাছে জমা দিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)।
রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাও রয়েছেন এই তালিকায়। মোট ৬২টি থানা এলাকায় প্রায় ১৫০ জন ডাক্তারদের তালিকা দেওয়া হয়েছে। কলকাতার পার্শ্ববর্তী হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা সহ একাধিক জেলাতে এই ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে নবান্ন। যাতে কোনও রোগী বা তার পরিবার সমস্যায় পড়লে ডাক্তারকে টেলিফোন করে সমাধানের পথ খুঁজে পান। কোনও রোগী বা তাঁর পরিবার স্থানীয় থানায় ফোন করলে ওই এলাকার নির্দিষ্ট চিকিৎসককে সেখানে যাওয়ার অনুরোধ করা হবে। প্রয়োজনে সেই ডাক্তারের কাছ থেকে ফোনে পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।