প্রায় ১০ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়ক পদে নিয়োগ রাজ্যে
অবশেষে অর্থদপ্তরের ছাড়পত্র মিলল। রাজ্যজুড়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে(Anganwadi Centre) বিপুল সংখ্যক কর্মী ও সহায়কের পদ খালি। সেসব পূরণ করতে নারী ও শিশুকল্যাণ দপ্তরের(Women And Child Welfare) পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ওই নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সব জেলাশাসককে। জানা গিয়েছে, সব জেলা মিলিয়ে আনুমানিক ১০ হাজারের মতো খালি পদ রয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যে সব ব্লকে আইসিডিএস প্রকল্পে আইনি জটিলতা নেই, সেখানে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে হবে।
করোনার জেরে স্বাস্থ্য খাতে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করতে হবে বলে গত বছরের এপ্রিল মাসে অর্থদপ্তর জানিয়ে দিয়েছিল, নতুন করে কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। কোনওভাবেই অতিরিক্ত ব্যয় করা যাবে না। সেপ্টেম্বর মাসে ফের অর্ডার করে জানিয়ে দেওয়া হয়, ব্যয় সঙ্কোচের নির্দেশ ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনকে মাথায় রেখে সেই অবস্থান বদলে নিয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া হল। যদিও দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এর কোনও কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি।
দপ্তর সূত্রে খবর, বহুদিন ধরেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়ক পদে নিয়োগ হয়নি। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু কিছু জায়গায় আইসিডিএস প্রকল্পে এই নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষা হয়ে গেলেও ফলাফল প্রকাশ হয়নি অথবা প্যানেল তৈরি থাকলেও নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। কোথাও আবার কোনও কিছুই হয়নি। দপ্তরের মতে, সব জায়গায় পর্যাপ্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়ক না থাকায় কাজকর্ম পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে। তাই নতুন করে কেন্দ্রগুলি খোলার পর যাতে সেই সমস্যা না থাকে, সে কারণেই দ্রুত নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে দপ্তর।
রাজ্যে ৫৭৬টি আইসিডিএস প্রকল্পে মোট ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৪১৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৭৫টি চালু রয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়কের যে বিপুল সংখ্যক পদ খালি রয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছে দপ্তর। কিন্তু সঠিক কত পদ খালি, তা স্পষ্ট জানা যায়নি। দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, জেলায় জেলায় খালি পদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকে। তাই নির্দিষ্ট করে সংখ্যা বলা সম্ভব নয়। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সহায়িকা এবং কর্মী মিলিয়ে আড়াই হাজারের মতো পদ খালি রয়েছে। বড় জেলাগুলিতে আসন খালির সংখ্যা বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় এই নিয়োগের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হতে পারে। তারপরে অবশ্যই কাজ করা যাবে না। তাই ভোট ঘোষণা হওয়ার আগেই যাতে শূন্যপদ পূরণের কাজ শুরু করা হয়ে যায়, তার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে দপ্তর।