সংবিধানের নতুন সংস্করণে নেই নন্দলাল বসুর আঁকা ২২টি ছবি! রাজ্যসভায় সরব সাংসদরা

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: মঙ্গলবার রাজ্যসভায় জিরো আওয়ারে বিজেপি সাংসদ রাধা মোহন দাস অগরওয়াল ভারতীয় সংবিধানের নতুন কপি থেকে শিল্পী নন্দলাল বসুর আঁকা ২২টি ছবি না থাকার বিষয়টি উথ্থাপন করেন। রাধা মোহন দাস অগরওয়াল রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়কে অনুরোধ করছিলেন বিষয়টি সংশোধন করে সংবিধানের মূল কপিটির প্রতিলিপি যাতে পাওয়া যায়, তা সুনিশ্চিত করতে।
ওই বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘যদি দেশের কোনও নাগরিক বা ছাত্র সংবিধানের একটি অনুলিপি কিনতে যান তবে তিনি আমাদের সংবিধানের নির্মাতাদের দ্বারা স্বাক্ষরিত মূল সংস্করণটি পান না। কী কারণে এবং কেন এটি ঘটেছে তা আমি জানি না, তবে সংবিধানের সংস্করণের মূল অংশগুলি অসাংবিধানিকভাবে বাদ দেওয়া হয়েছিল, আমরা সবাই জানি যে সংবিধান সংশোধনের জন্য একটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে, যার মধ্যে দাড়ি এবং কমা পর্যন্ত রয়েছে।’
জগদীপ ধনকড় এবিষয়ে বলেন, সরকার বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। তিনি বলেন, ‘আমি হাউসের নেতার কাছে আবেদন করছি, যে দেশে শুধুমাত্র ভারতীয় সংবিধানের মূল সংস্করণটির প্রচার করা উচিত। এর অন্যথা হলে সরকারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জুন খড়গে বিষয়টিকে “অপ্রয়োজনীয়” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, যখন ডঃ বি আর আম্বেদকরের মানহানি করার চেষ্টা হচ্ছিল, তখন সংসদের নেতা জগৎ প্রকাশ নাড্ডা বলেছিলেন যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু!
এই বিষয়টি নিয়ে সংসদ কক্ষ কার্যত দুটিভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন জগদীপ ধনখড়কে বলেন, “এখানে আমার কম্পিউটারে সংবিধানের ৪০৪টি পৃষ্ঠা রয়েছে, এতে কোনও চিত্র নেই, এটা সম্পূর্ণ বেআইনি।”
উল্লেখ্য, নন্দলাল বসুর আঁকা ছবিতেই সেজে উঠেছিল সংবিধানের পাতা। এই পুরো কাজে তিনি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করেছিলেন। মোট ২২টি ছবি এঁকেছিলেন নন্দলাল বসু। এই সবকটি ছবির মূল বিষয়ই ছিল ভারতের সংস্কৃতি। পুরাণ থেকে ইতিহাস— সমস্ত কিছুই ছুঁয়ে গিয়েছিল তাঁর তুলি। সেখানে যেমন ছিল রামায়ণ-মহাভারতের ঘটনা, তেমনই ছিল সিন্ধু সভ্যতা, বুদ্ধ, মুঘল শাসন, এবং অবশ্যই স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিবৃত্তও। অশোক, সম্রাট আকবর, টিপু সুলতান, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু— এঁরা সবাই সংবিধানের অংশ হয়ে থেকেছেন।