পরিবর্তনের আমলে পুনরুজ্জীবিত বাংলার মৃতপ্রায় বস্ত্র ও হস্তশিল্প
কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও রূপায়ন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী দেশের মধ্যে বাংলায় সবচেয়ে বেশি হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সারা দেশের ১৭.৮৩ শতাংশ হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে বাংলার গ্রামাঞ্চলে (যা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি) এবং শহরাঞ্চলে এর সংখ্যা ১৪.১ শতাংশ (বাংলা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে)।
গ্রাম ও শহর মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ হস্তশিল্পে সারা ভারতবর্ষের মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে। ১৬.৩ শতাংশ হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে রাজ্যে।
বামফ্রন্ট সরকারের সময় থেকে রাজ্যের ঐতিহ্যগত তাঁত ও হস্তশিল্প এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অবহেলিত হতে হতে ক্রমশ বিলুপ্তির পথে এগোচ্ছিল। পরিবর্তনের আমলে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প ও তাঁত শিল্প।
বিশ্ব বাংলা ব্র্যান্ড
বিশ্ব বাংলা মুখ্যমন্ত্রীর নিজের সৃষ্টি। এই ব্র্যান্ডটি বর্তমানে রাজ্যের হ্যান্ডলুম ও হস্তশিল্পকে পুনরুদ্ধার করেছে। মঞ্জুসা ব্র্যান্ডের আওতায় পশ্চিমবঙ্গ হস্তশিল্প উন্নয়ন কো-অপারেটিভ তাদের পণ্য বিক্রি করে এবং তন্তুজ এর অধীনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হ্যান্ডলুম তাঁতি কো-অপারেটিভ সোসাইটি তাদের পণ্য বিক্রি করে।
শিল্পীরা যাতে তাদের তৈরি জিনিস বিক্রি করতে পারেন এবং আরও অর্ডার পেতে পারেন সেজন্য রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত মেলা ও হাটের আয়োজন করা হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিশ্ব বাংলা আউটলেট খোলা হয়েছে। আরও আউটলেট সহ কলকাতায় একটি বিশ্ব বাংলা শপিং মল খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের গতি
স্বাভাবিকভাবেই, বাংলার হস্তশিল্প ও তাঁত প্রস্তুতকারকরা এখন ভালোভাবে ব্যবসা করছে। এখন, তারা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে তাদের এই দক্ষতা প্রসার করতেও সমানভাবে আগ্রহী।
ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ এবং বস্ত্র বিভাগ ও ইউনেস্কোর যৌথ প্রচেষ্টায় রুরাল ক্রাফট হাব প্রজেক্ট অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করেছে।
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য
রাজ্য সরকারের প্রজেক্ট মসলিন প্রকল্পের মাধ্যমে ৯টি জেলায় মোট ২১টি সাধারণ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরী করা হয়েছে৷ এগুলি তৈরীর ফলে মসলিন কারিগরদের সংখ্যা ও আয় দুইই ব্যাপকভাবে বেড়েছে৷
জিআই স্বীকৃতি
রসগোল্লা ও জয়নগরের মোয়ার পাশাপাশি বাংলার ছয়টি গ্রামীণ শিল্প — পাঁচমুড়ার টেরাকোটা , ডোকরা , চড়িদার ছৌ মুখোশ , কুশমান্ডীর কাঠের মুখোশ , বাংলার পটচিত্র ও মাদুর – পেয়েছে জিআই স্বীকৃতি। এই জিআই স্বীকৃতি এদের গুণগত মান বজায় রেখে গ্লোবাল ব্র্যান্ডিং-এর কাজে সাহায্য করবে৷ ফলে , সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলির আর্থসামাজিক বিকাশের পথ সুগম হবে৷